জাতীয়

কলমাকান্দায় টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে কয়েক লক্ষ হেক্টর আমন ধান পানির নিচে

কলমাকান্দা প্রতিনিধি : টানা দুইদিন অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় নেত্রকোনার কলমাকান্দায় নদীর পানি দ্রুত বেড়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকা ও নিম্নাঞ্চল। রোববার সকালে কলমাকান্দায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৭২ মিলিমিটার এবং উপজেলার প্রধান নদী উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কলমাকান্দা উপজেলার নয়াপাড়া, মুক্তিচর, ধান মহাল, বিশরপাশা, বাউশাম, হরিপুর চকবাজার, আনন্দপুর, বরুয়াকোনা, রংছাতি পাকা সড়কের ওপর দিয়ে পানি বয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও কলমাকান্দা সদরসহ লেংঙরা, খারনৈ, রংছাতি, নাজিরপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কের ওপর দিয়ে পানি বয়ে যাচ্ছে। এতে পানিবন্দী হয়েছে উপজেলার হাজারো মানুষ। তলিয়ে গেছে শতাধিক পুকুর, আউশ, রোপা ও আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসলের বীজতলা। অতি বর্ষণের কারণে সীমান্তবর্তী উব্দাখালী নদীসহ গনেশ্বরী, মঙ্গলেশ্বরী, মহাদেব নদ, মহেষখলা নদী ও পাঁচগাও ছড়ায় পাহাড়ি ঢলের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কলমাকান্দা সদরের সঙ্গে চারটি ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা।

অন্যদিকে কলমাকান্দা সদর ইউনিয়নের মুক্তিচর, নয়াপাড়া, ড্রেইনপাড়, চাঁনপুর, চান্দুয়াইল, সাউদপাড়া, শালজান, গুছাকুলিয়া, খাসপাড়া, চিনাহালা, নয়ানগর, নাগিনী চাকুমপাড়া, বিশরপাশা, খারনৈ ইউনিয়নের মেদিরকান্দা, রুদ্রনগর রামভদ্রপুর, রংছাতি ইউনিয়নের রামনাথপুর, বিশাউতি, রায়পুর, কৃষ্টপুর বরকান্দা, জঙ্গলবাড়িসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। আমন ধান, মাছের পুকুর, বীজতলা ও ঘর বাড়ি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত বুধবার থেকে টানা বষর্ণে কয়েক লক্ষ হেক্টর আমন ধান পানির নিচে। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে পর পর দু বার প্লাবিত কলমাকান্দা- দূগাপুর বিস্তৃর্ণ এলাকা। এই অসময়ের বন্যায় কাচা ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। রাস্তা -ঘাট ব্রীজ কালভার্ট পানির নিচে। পানিবন্দী কয়েক হাজার মানুষ। বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকট। বসত বাড়ির বেশির ভাগ টয়লেট পানির নিচে।গরু ছাগল নিয়ে কৃষকরা বিপাকে। মানুষের দূর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। আমন ধানের বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে।

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে পর পর দু দফায় বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় গভীর উৎবেগ ও উৎকণ্ঠা সহিত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক মহাসচিব ব্যরিস্টার কায়সার কামাল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ক্ষতি কাটিয়ে উঠা, জিনিস পত্রের দাম স্থিতিশীল রাখা মোকাবেলার জন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

স্থানীয় কৃষক মোখলেস, রবি মন্ডল, মঞ্জিল, কাসেম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, আমরা বারে বারেই হেরে যাই হঠাৎ এই আকর্ষিক সৃষ্ট বন্যা ও ভাগ্যের কাছে। ক্ষতিগ্রস্ত এই কৃষকদের পাশে দাঁড়াবার মত কেউ নেই। বন্যার সময়ে এবং বন্যা পরবর্তী সময়ে আমাদের মত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন।