কেন্দুয়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন, থানায় মামলা
কিশোর শর্মা-কেন্দুয়া প্রতিনিধি :
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের সিংহেরগাঁও গ্রামের মো: মনির হোসেন তার স্ত্রীকে যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন করার অপরাধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার ৪ আগস্ট সকালে মামলার বাদী ইতি আক্তারের সাথে সাক্ষাতে কথা হলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে স্বামীর নির্যাতনের কাহিনীর কথা তুলে ধরে বলেন, আমার স্বামী একজন দুর্ধর্ষ প্রকৃতির লোক। সে বিভিন্ন সময়ে আমাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে।
ইতি আরো জানান, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই আমার স্বামী বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করত। টাকা এনে না দিলে আমাকে ভীষণভাবে নির্যাতন করত। এ বিষয়ে ঘরোয়ানা ভাবে কয়েকবার আপোষ মীমাংসা করলেও স্বামী তা মানতো না, নির্যাতনের সীমা আরো বেড়ে যেত। তবুও সুখে-শান্তিতে স্বামীর সংসার করার জন্য আমি বিভিন্ন সময়ে বাবার বাড়ি থেকে স্বামীকে টাকা এনে দিয়েছি।
এদিকে হঠ্যাৎ করে আমাকে মারধর করিয়া এই বলে হুমকী দেয় যে, আমি আমার বাপেরবাড়ী হইতে আরো তিন লক্ষ টাকা যৌতুক না আনিয়া দিলে আমাকে খুন জখম করিবে। এ কথা প্রতিবাদ করায় ঘটনার দিন ২৪ জুলাই দুপুরে সকল বিবাদীগণ শুয়ার ঘরে প্রবেশ করিয়া আমাকে শুয়া অবস্থায় পাইয়া জোরপূর্বক ধরিয়া আমার পেটে ও স্পর্শকাতর স্হানে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি ও লাথি মারিতে থাকিলে আমি অজ্ঞান হইয়া যাই। এমতাবস্থায় আমাকে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক দেখিয়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। আসলে আমি ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, এখন আমার পেটে বাচ্চা নড়াচড়া করছে না। আমি আমার স্বামীর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।
জানা যায়, গত ২২মার্চ ২০২০ সালে ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আঠারবাড়ী ইউনিয়নের উত্তরবনগাঁও গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে সঙ্গে কেন্দুয়া উপজেলা আশুজিয়া ইউনিয়নের সিংহেরগাও গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মো: মনির হোসেনের সাথে ইসলামি শরীয়া মোতাবেক রেজিস্ট্রি কাবিনমুলে
বিয়ে হয়।
এদিকে কেন্দুয়া থানা পুলিশের এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, গত ২৯ জুলাই ৪ জনকে আসামী করে কেন্দুয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা ২০২০ সং-০৩, ১১(গ)/৩০ ধারায় মামলা দায়ের করেন, মামলা নং-৩৪। আসামীরা পলাতক রয়েছে, তবে গ্রেফতারের জন্য জোর চেষ্টা চলছে।