জাতীয়

গৌরীপুরে মাদরাসার সুপারের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ!

গৌরীপুর প্রতিনিধি :ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার নামাপাড়া কেরামতিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপার মাকসুদুল জাহান মো. নুহু মিয়া’র বিরুদ্ধে সেকেন্ডারী এডুকেশন ডেভলাপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি) প্রকল্পের অধিনে প্রতিবন্ধীদের বরাদ্দকৃত অর্ধলক্ষ টাকা ও শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি’র ৫৬হাজার ৬১০টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি সোমবার (৭ অক্টোবর/২৪) নিশ্চিত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাদরাসা কমিটির সভাপতি মো. শাকিল আহমেদ। তিনি জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনা তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

প্রতিবন্ধীদের খাতে ও টিউশন ফিসের টাকা উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করেন মাদরাসার সুপার মাকসুদুল জাহান মো. নুহু মিয়া। তিনি জানান, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের টাকা দিয়ে ভবনের ছাদ মেরামত করা হয়েছে। টিউশন ফিসের টাকা তার ব্যক্তিগত তহবিলে রয়েছে। শিক্ষকদের মাঝে বিধি অনুযায়ী বিতরণ করে দিবেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, রুটিন অনুযায়ী ক্লাসে উপস্থিতি ও নিয়মিত সঠিক সময়ে মাদরাসায় সহকারী শিক্ষকদের উপস্থিত হওয়ার বিষয়ে কড়াকড়ি করায় তারা এসব অভিযোগ করছেন।

অভিযোগ ও শিক্ষকদের সূত্রে জানা যায়, মাকসুদুল জাহান মো. নুহু মিয়া মাদরাসার সুপার ২০১৭ সনে যোগ দেন। এরপর থেকে মাদরাসার আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাব তিনি দিচ্ছেন না। ২০২২সনে নবায়ন স্বীকৃতি ও কমিটি না থাকায় মাদরাসার কার্যক্রমেও বিঘ্ন ঘটে। ২০২২-২৩অর্থ বছরে সেকেন্ডারী এডুকেশন ডেভলাপমেন্ট প্রোগ্রামের অধিনে পিবিজিএসআই স্কিমের আওতায় ৫লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বিল ভাউচার প্রদান করা হলেও খাতওয়ারী কাজ হয়নি। মাদরাসার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বরাদ্দকৃত ৫০হাজার টাকা সুপার আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও ২০২৩-২৪অর্থ বছরের টিউশন ফিসের টাকা জুলাই মাসের ৪ ও ৩০তারিখে দুটি চেকের মাধ্যমে মাদরাসার সুপার ও সাবেক সভাপতি মঞ্জুর আহম্মেদ বাহার উত্তোলন করেন। এছাড়াও ২০২১-২২সনের পুরাতন বই বিক্রির ৩৪হাজার টাকা সুপার আত্মসাৎ করেছেন। সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মো. নুরুল হক মন্ডল জানান, ভবনের ছাদের মেরামত করা হয়েছে উন্নয়নখাতের ৮৫হাজার টাকায়, প্রতিবন্ধীদের টাকায় নয়।

এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মঞ্জুর আহাম্মেদ বাহার জানান, যেহেতু মাদরাসায় প্রতিবন্ধী নেই, সে জন্য এ টাকা মাদরাসার ফান্ডে থাকার সিদ্ধান্ত ছিলো। আমার মেয়াদ ডিসেম্বর মাসে শেষ হয়েছে। এরপরে কোনো চেকে আমি স্বাক্ষর করি নাই। তাহলে টিউশন ফিসের টাকা অবশ্যই জাল স্বাক্ষরে উত্তোলন করা হয়েছে।

মাদরাসার সুপারের বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেংকারির এ অভিযোগ দায়ের করেন মাদরাসার সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মো. নুরুল হক মন্ডল, সহকারী মৌলভী মো.আব্দুর রাশিদ, মো. হারুন অর রাশিদ, সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা, মো. হাবিবুর রহমান, আহাম্মদ মোস্তফা কামাল, হোসনে আরা, মতিউর রহমান, আনোয়ার হোসেন, সহকারী মৌলভী জয়নাব আক্তার, আব্দুল হাই, এবতেদায়ী প্রধান আবুল হোসেন, ক্বারী শিক্ষক সৈয়দা হালিমা আক্তার, সহকারী শিক্ষক জলী আক্তার সুলতানা, আয়া আম্বিয়া আক্তার।