চায়ের স্টলে আড্ডা বিভিন্ন অপরাধ জন্ম দেয় : ওসি মাইন উদ্দিন
ত্রিশাল প্রতিনিধি ঃ ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌর শহরসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সকল চা স্টলে টেলিভিশন না চালানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন ত্রিশাল থানার অফিসার ইনচার্জ মাইন উদ্দিন।
এমন মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করায় ওসি মোহাম্মদ মাইন উদ্দিনকে সকল শ্রেণীপেশার লোক ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানিয়েছেন।
ওসি মাইন উদ্দিন এর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন সতর্ক বার্তা দেওয়ার পর পোষ্টটি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। পোস্ট কমেন্টে হাজার হাজার মন্তব্যকারী এমন মহতি উদ্যোগকে যুব সমাজ রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে মন্তব্য করেছেন। আবার ওই লেখাটি কপি পেস্ট করে পোস্টও করা হয়েছে অসংখ্য বার। অন্যদিকে বিভিন্ন জনের পোস্ট করা ওই সতর্ক বার্তাটি শেয়ার করেও খবরটি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন মন্তব্যকারী লিখেন, এই প্রথম এমন ভালো কাজে অগ্রসর দেখেছি, ওসি সাহেবের এমন কাজ দেখে আমাদের অনেক ভালো লেগেছে। তবে এলাকার সচেতন মহল অনেক খুশি।
আরেকজন লিখেন, এমন ওসি আগে কখনও আমরা পাইনি, সত্যি তিনি একজন মহৎ কাজ করেছেন। আমরা চাই পুলিশের সচেতনতার অভিযান অব্যাহত থাকুক।
জানা যায়, চা স্টলগুলোতে রাতদিন টেলিভিশন প্রদর্শন করার কারণে উঠতি বয়সী যুবসমাজসহ লোকজন তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে সময় না দিয়ে উক্ত উল্লিখিত স্থানগুলোতে আড্ডা দেন। চা স্টল অন্যান্য স্থানে আড্ডা দেওয়ার ফলে অনেকের পরিবারে নেমে এসেছে ঝগড়া ও অশান্তি।
উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, ওসি মাইন উদ্দিন যোগদান করার পর থেকে ত্রিশালের আইন শৃঙ্খলা ভাল, তার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড চোখে পড়ার মতো। আজকে যে অভিযানটি চালিয়েছেন এতে করে অনেকটাই অপরাধ কমে আসবে।
পৌর মেয়ের এবিএম আনিসুজ্জামান বলেন, নিশ্চয়ই একটি মহৎ কাজ। এ কাজের জন্য পুলিশের সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
ত্রিশাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন জানান, এইসব চা দোকান গুলোতে টেলিভিশন প্রদর্শনের ফলে উঠতি বয়সের ছেলে, যুবকসহ বিভিন্ন লোকজন অহেতুক বসে বসে আড্ডা দেন। উঠতি বয়সের ছেলেরা, যুবকরা বসে বসে মোবাইলে বিভিন্ন অনলাইন জুয়া খেলে। আইপিল খেলা দেখে আর বাজি (জুয়া) ধরে। বাজিতে হেরে টাকার সমস্যা হলে অনেক দোকানদার লাভে টাকা বিনিয়োগ করে থাকে।এতে ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক ভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, পরিবারের বাবা, মা, স্ত্রী, সন্তানদের সময় না দিয়ে, সবটুকু সময় চা দোকানে টেলিভিশন দেখে আড্ডা দেওয়ার ফলে পারিবারিক অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।যারা প্রকৃতপক্ষে চা পান করতে যাবে তারা এই দৃশ্য দেখে তাঁরা দোকানের আশপাশেও যেতে লজ্জা পায়। অনেক চা দোকানের পাশে ছোট রুম করে সেখানে ঘন্টা চুক্তিতে ভাড়া দিয়ে তাস, লুডু দিয়ে জুয়া খেলার সুযোগ করে দিচ্ছে।গভীর রাত পর্যন্ত চা দোকানে টেলিভিশন দেখানোর ফলে অনেক অপরাধী ভদ্রবেশে আড্ডা দিয়ে গভীর রাতে চুরি, ছিনতাই করার সুযোগ পাচ্ছে।
এলাকার সচেতন মহল বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বীগ্ন। এলাকার যুব সমাজকে জুয়ার মতো নেশা থেকে ফিরিয়ে আানা, পারিবারিক শান্তি ফিরিয়ে আনাসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সকলের সহযোগিতায় চা ষ্টল থেকে টেলিভিশন সড়িয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতামূলক বক্তব্যসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান ওসি মাইন উদ্দিন।