ভালুকায় গার্মেন্টস কারখানায় শ্রমিক হত্যার ঘটনায় ওএসকে ফেডারেশনের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার মাস্টারবাড়ি এলাকায় অবস্থিত ক্রাউন ওয়ার্স প্রাইভেট লিমিটেড গার্মেন্ট কারখানায় শ্রমিক হত্যার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ। এক যুক্ত বিবৃতিতে ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াসিন এবং সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন এই শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহবান জানান। বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় উল্লেখ করেন, পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলা হতে চাকরি করতে আসা সাদ্দাম হোসেনের লাশ কারখানার নির্মাণাধীন পাঁচতলা ভবনের লিফটের গর্ত থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯ টায় ওই ভবনের লিফটের ৪০ ফুট নিচ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। সাদ্দাম হোসেন (২০) কারখানায় গার্মেন্ট সেকশনে কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর হিসেবে চাকরি করতেন। জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি কারখানায় ডিউটি করেছেন। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন সাদ্দাম হোসেন। বৃহস্পতিবার তার বড় ভাই একই কারখানার শ্রমিক সেলিম হোসেন ভালুকা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শ্রমিকদের মারফত জানা যাচ্ছে নিহত সাদ্দাম হোসেনের গলা কাটা ও হাতের রগ কাটা ছিল। কারখানার শ্রমিকরা নির্মাণাধীণ লিফটের আশপাশ দিয়ে যাতায়াত করতেন বলে জানা যায়। তাহলে সাদ্দাম হোসেনের লাশ লিফটের নিচে আসল কিভাবে? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সাদ্দাম হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে নেতৃদ্বয় প্রশ্ন রাখেন, কারখানার ভিতর একটি সুরক্ষিত পরিবেশে কিভাবে শ্রমিক হত্যা করা সম্ভব এবং কারা এর সাথে জড়িত থাকতে পারে?
বিবৃতিতে বলা হয়, কারখানার শ্রমিকরা সবসময় কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে থাকে। সাধারণ শ্রমিকদের পক্ষে কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে এ ধরণের অপরাধ ঘটানোর সুযোগ কম। বরং এ কারখানার শ্রমিকদের দীর্ঘদিন ধরে কারখানার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। উর্দ্ধতন এসব কর্মকর্তাদের চাকুরিচ্যুত করার জন্য শ্রমিকরা আন্দোলন করছে বলে বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় উল্লেখ করেন। নেতৃদ্বয় অভিযোগ এনে বলেন, ভালুকা শিল্পাঞ্চলে কারখানার মালিকরা তার ভাড়াটে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রেখেছে। আওয়ামীলীগ স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পরও এ পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন ঘটেনি বরং পূর্বের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরাই দলীয় পরিচয় চেঞ্জ করে শ্রমিকদের দমন-পীড়ন-নির্যাতন সহ আগের মত সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে শ্রমিকরা ভয়ে তাদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না। কোথাও কোথাও শ্রমিকরা প্রতিবাদ করলে তাদের শারীরিক নির্যাতনসহ মেরে ফেলার ঘটনাও ঘটছে। নেতৃদ্বয় শিল্পাঞ্চল থেকে সকল ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করে শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের সভা-সমাবেশ করার অধিকার প্রদানসহ গণতান্ত্রিক শিল্প পরিবেশ সৃষ্টির আহবান জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি