ভালুকা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বেহাল দশা
আনোয়ার হোসেন তরফদার ভালুকা প্রতিনিধি ঃ
প্রাতি মাসে প্রায় ১ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের উৎস ভালুকা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের ভবনটি যে কোন মূহুর্তে ধসে পড়তে পারে। কার্যালয়ের দেয়ালের বিভিন্ন অংশে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। বেশ কয়েকটি স্থানে ছাদ থেকে আস্তর খসে পড়ে রড বেড়িয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের কার্যক্রম। দ্রুত ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা না করা হলে, যে কোন মূহুর্তে ভবনটি ধসে পড়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখকসহ সেবাগ্রহীতারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ছাদের পলেস্টার খসে কয়েকটি স্থানে ঢালাইয়ের রড বের হয়ে গেছে। কার্যালয়টির দেয়ালে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। ছাদের বিমেও ফাটল ধরেছে। সিলিং ফ্যানের হুকগুলো মরিচা ধরে নষ্ট প্রায়। ভবনের অনেক স্থানে মেঝের ঢালাই উঠে গেছে। বিদ্যুৎ লাইনও ঝুঁকিপূর্ণ। বর্ষার সময় বৃষ্টির পানি ও শীতের সময় ছাদের ভিতর দিয়ে পানি চুইয়ে পড়ে। বৃষ্টি শুরু হলে টেবিলের ওপর পলিথিন ও ছাতা দিয়ে রক্ষা করা হয় প্রয়োজনীয় দলিল-দস্তাবেজ। এসবের মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। দলিল লেখক ও ভূমি ক্রেতা-বিক্রেতাদেরও দিন কাটছে দুর্ঘটনার আশংকায়।
জানা যায়, ১৯৮৮ সালের ২২ ডিসেম্বর তখনকার উপ-রাষ্ট্রপতি বিচারপতি এ.কে.এম নূরুল ইসলাম ভবনটির উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে ভবনটি।
হবিরবাড়ি ইউনিয়নের মফিজুল আলম আসেন জমি ক্রয়ের দলিল করতে। তিনি বলেন, মাঝে মাঝে আসতে হয় রেজিস্ট্রি অফিসে। ভবনের ভেতরে ভয় লাগে। অনেক দিন ধরে রেজিস্ট্রি অফিসের এ অবস্থা। দেখে মনে হয়, এই বুঝি পলেস্টার খসে পড়লো! তাছাড়া যেভাবে ভূমিকম্প হচ্ছে, যে কোন সময় এ ভবনটি ভেঙে পরে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
দলিল লেখক শফিকুল ইসলাম জানান, ‘অফিসটির অবস্থা খুবই নাজুক। যে কোন মুহুর্তে ধসে পড়তে পারে। বড় ধরণের দুর্ঘটনার আগেই দ্রুত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। এমপি মহোদয় ডিও লেটার প্রদান করেছে, সংসদেও উপস্থাপন করেছে। আমরা আশা করছি, এমপি মহোদয়ের হস্থক্ষেপে দ্রুত আমরা ভবন পাবো।’
সাব-রেজিস্ট্রার মো. বোরহান উদ্দিন সরকার জানান, ‘ভবনটি দ্রুত পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে পুনর্নির্মাণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এই দপ্তর থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় হলেও আমাদের এই আতংকের কথা কেউ শুনছে না। এই এলাকায় একটি ভূমিকম্প হলেই ভবনটি ধসে পড়বে। অফিসে যতক্ষণ থাকি ভয়ে থাকি। বজ্রপাত হলে অফিসের বাইরে চলে যাই।’
স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজিম উদ্দিন আহাম্মেদ ধনু জানান, ‘জরুরি ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে ডিও লেটার প্রদান করা হয়েছে। আশা করছি খুব তারাতারিই ভবনটি নির্মাণ করা সম্ভব হবে।’