অর্থনীতিজাতীয়শিক্ষা ও সংস্কৃতি

মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে জলঢাকার ১০ টি নদী

হাসানুজ্জামান সিদ্দিকী হাসান: নদীমাতৃক বাংলাদেশের সব জায়গার মতো নীলফামারীর জলঢাকার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে প্রায় ১০টি নদী। কিন্তু দখল, দূষণ ও নাব্যতা হারিয়ে এসব নদীগুলো মরা খালে পরিণত হয়ে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা নদীগুলো দিয়ে বড় নৌকা করে একসময় বিভিন্ন স্থান থেকে পন্য সামগ্রী আমদানি রফতানি করা হতো। বর্তমান সময়ে বর্ষা কালে কিছু শেলো মেশিন চালিত নৌকা চলাচল দেখা গেলেও এখন দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। বর্তমানে নদী সমুহের বুকে পানি শুন্য হয়ে ধু-ধু বালু চরে পরিনত হওয়ায় নেই আগের মতো জলরাশি। অপরদিকে নদীগুলোর নেই তার তর্জন গর্জনসহ পানি প্রবাহ। দখল দুষন আর নাব্যতা হারিয়ে নদী সমুহ বিলিনের পথে । উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের বড়ঘাট, শৌলমারী, ডাউয়াবাড়ী, বালাগ্রাম,গোলমুন্ডা,শিমুলবাড়ী,খুটামারা,ধর্মপাল, ইউনিয়ন সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে থাকা নদীগুলোপ্রভাবশালীদের দখল আর নদী সমুহ খননের অভাবে পরিনত হয়েছে মরা খাল সহ ধু ধু বালু চরে। ফলে কৃষি নির্ভর এলাকা হিসাবে বিপাকে পড়েছে কৃষক। বর্ষাকালে বন্যার পানি আটকে থাকায় দুর্বিষহ জীবন যাপন করেন নদী পারের মানুষজন।

বর্তমান সময়ের সেচ মৌসুমে নদীতে পানি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় কৃষকদের। কৈমারীর গাবরোল হাজীপাড়া গ্রামের কৃষক সু্বহান মিয়া জানান বুল্লাই নদী থেকে পানি দিয়ে আগে ফসল উৎপাদন করতাম।কিন্তু বর্তমানে নদী ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়ায় সেই ব্যাবস্থা এখন আর নেই। তিস্তার পার এলাকার শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন নদীগুলোকে বাঁচাতে হলে নদীর সীমানা নির্ধারণ করে খনন করা জরুরী। এদিকে উপজেলার বুল্লাই,চারাল কাটা, যমুনেশ্বরী, ধামজাই, চিকলি,ইছামতী,বুড়ি তিস্তা,বড় তিস্তাসহ প্রায় ১০ টি নদী রয়েছে।

আর পানি শুন্য এই নদী সমুহের বুকে জেগে উঠা ধু ধু বালু চরে এখন কৃষকেরা দখল করে ধানের চারা, ভুট্টা রোপন সহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করছেন।
ফলে নদী সমুহ নাব্যতা হারিয়ে পরিনত হয়েছে ফসলের জমি। আর অনেকে এ নদী সমুহে ঘের দিয়ে পানি আটকে মাছ চাষ করছেন। গত কিছু দিন ধরে সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা ও জানাযায় উপজেলার প্রায় সকল নদীর একই চিত্র। এতে একদিকে যেমন ফসলে সেচের অভাব দেখা দিয়েছে,অন্যদিকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে দেশীয় মাছ।

কৈমারী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পেয়ারী বেগম বলেন ভরাট হয়ে যাওয়া নদী গুলো খনন করা হলে এ এলাকার কৃষকেরা অনেক উপকৃত হতো। তাই নদী সমুহ পুনঃ খনন করার দাবী জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন জানান উপজেলার নদী সমুহ খননের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করি নদীসমুহ খনন করা সম্ভব হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া বিভাগীয় প্রকৌশলী জানান,সারা দেশের মতো এ জেলার নদী সমুহ একসঙ্গে খননের প্রকল্প দেওয়া হয়েছে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে। তা অনুমোদিত হলে আমরা কাজ শুরু করব।