ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আউটডোরের সাধারণ ছবি তুলতেও নিষেধাজ্ঞা : হেনস্থা সাংবাদিক
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আউটডোরের সাধারণ ছবি তুলতেও নিষেধাজ্ঞা : হেনস্থা সাংবাদিক
বাবলী আকন্দ ঃ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরের ওষুধ কাউন্টার (মহিলা) তে প্রচন্ড ভীড়ের ছবি তুলে ২৭ তারিখ হেনস্থা হতে হয় দৈনিক আজকের বাংলাদেশ পত্রিকার বার্তা সম্পাদককে। ছবি তোলার এক পর্যায়ে আনসার সদস্যদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। এ সময় তারা মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন এবং বলেন ছবি ডিলিট করতে। তারা উচ্চস্বরে জানায় হাসপাতালের পরিচালকের অনুমতি ছাড়া ছবি কিংবা ভিডিও তোলা নিষেধ। তারা প্রতিবেদকের চারপাশে রীতিমতো ঘেরাও হয়ে দাঁড়ায় এবং পরিচালকের বরাবর যেতে বলে। এক পর্যায়ে শিউলি নামে একজন আনসার সদস্য প্রতিবেদকের হাতে ধরে টেনে নিয়ে যেতে চায়। ওয়ার্ড মাষ্টার তাকে থামতে বললেও অন্য আনসার সদস্যরা গালিগালাজ করতে থাকে এবং জানায় এমন সাংবাদিকের আইডি কার্ড তাদের কাছে এভেইলেবল আছে। এ সময় তাদের কারোরই নেইম-প্লেট ছিলো না। এক পর্যায়ে ওয়ার্ড মাষ্টারকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায় আনসার সদস্যরা। ওয়ার্ড মাষ্টার প্রতিবেদককে জানায় এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর এর কাছে যাবেন নাকি ছবি ও ভিডিও ডিলিট করবেন। প্রতিবেদক এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর এর সাথে দেখা করেন সাথে আনসার সদস্যগণ। এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ডাঃ জাকিউল ইসলাম উক্ত প্রতিবেদককে জানান, হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা নিষেধ যা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনাপ্রাপ্ত। উক্ত প্রতিবেদক সে বিষয়ে নোটিশ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান নোটিশ আছে। তারপর সেই ভিডিও ডিলিট করেন। অথচ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এরুপ নিষেধাজ্ঞা জারির পর সেটি গত ২০২০ সালেই তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল।তবুও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনো বলবৎ আছে। পাবলিকলি সংঘটিত প্রতিনিয়ত কার্যক্রমে কি এমন গোপন বিষয় থাকতে পারে যার জন্য ছবি তুলতে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন হয়, সেটিই এখন বিশাল প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে!
উল্লেখ্য, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরের ওষুধ কাউন্টার (মহিলা) তে গতকাল উপচেপড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়। কাউন্টারের ২ পাশে নারীদের ২ টি লাইন থাকা সত্বেও ভীড় না কমে বরং একেঁবেঁকে সাপের মতো লাইন এক পাশের ফ্লোর থেকে অন্য পাশে চলে গিয়েছে। প্রচন্ড গরমে মহিলাদের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছিল। তাদের সাথে থাকা শিশুদের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গিয়েছিল। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওষুধ কাউন্টারে মাত্র ১ জন সার্ভিস দিচ্ছে সেসময়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরের ওষুধ কাউন্টার (মহিলা) তে দীর্ঘ লাইন ধরে ওষুধ নিতে আসা ভুক্তভোগীরা জানায়, তারা সেই সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। অনেকেই দীর্ঘ লাইনে ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়ে ওষুধ না নিয়েই বের হয়ে গেছে। শুধু ওষুধ কাউন্টারেই নয়, ডাক্তারদের রুমের সামনেও একই অবস্থা। ভুক্তভোগীরা জানান, অনেক সময় ডাক্তাররা দেরি করে আসেন, আবার অনেক সময় নাস্তা খাওয়ার জন্য বিরতি নেয়। সে সময়টা প্রচন্ড ভিড় হয়। অনেকে অভিযোগ করে বলেন, পিয়ন এবং আনসারদের কিছু টাকা দিলে তারা ‘স্টাফ’ বলে রোগী ঢুকিয়ে দেয় এবং ওষুধ নিয়ে দিতে দেখা যায়। যেজন্য সকাল থেকে এসে দাঁড়িয়ে থাকা দীর্ঘ লাইন সহজে শেষ হয় না। ঘটার পর ঘণ্টা ভুক্তভোগীদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।এতে করে অনেক সময় একে অন্যের সাথে ঝগড়াও লেগে যায়। অপেক্ষারত ভুক্তভোগীরা দীর্ঘ লাইনের অপেক্ষা শেষ না হওয়ায় সেই মেঝেতেই অনেকের হাঁটু মেলে বসে পড়ে। হাসপাতালে আউটডোরের ওষুধ কাউন্টার (মহিলা) তে প্রচন্ড ভীড়ের ছবি তুলতে গেলে হেনস্থা হতে হয় দৈনিক আজকের বাংলাদেশ পত্রিকার এ সাংবাদিককে।