লাদাখে অল্প সময়েই চিন আগ্রাসী হতে পারে, সতর্ক করলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান
হিন্দুস্থান টাইমস: ভারতীয় সেনাপ্রধান জানান,‘দুই দেশের মধ্যে প্রত্যেক দফায় আলোচনার পরই যে ইতিবাচক ফল আসবে, সেটা নাও হতে পারে।প্যাংগং হ্রদের দুই তীর থেকে সেরা সরানো সম্ভব হয়েছিল অনেকগুলি দফায় কথা বলার পর।দুই দেশের মধ্যে দ্বাদশ দফায় কথা চলবে।করোনা পরিস্থিতির কারণে হয়ত একটু সময় লাগছে। কিন্তু আলোচনা প্রক্রিয়া চলবে।’
প্যাংগং হ্রদের দুই তীর বাদে লাদাখ সীমান্তের কোথাও এখনও সেনা সরায়নি চিন।সেকারণেই সেনাবাহিনীকে আত্মতুষ্টিতে না ভুগে আরও সতর্ক থাকার বার্তা দিলেন সেনা প্রধান মনোজ মুকুন্দ নারাভানে। সেই সঙ্গে তাঁর বার্তা, লাদাখ সীমান্তে চিনা সেনা খুব সময়ের নোটিশে আরও আগ্রাসী হয়ে উঠতে পারে, সেইজন্য ভারতীয় সেনাকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। তবে এই সবকিছুর মধ্যেও দুই দেশের মধ্যে সমস্যা সমাধানে আলোচনার রাস্তা খোলা রাখছেন সেনা প্রধান।
লাদাখ সীমান্তে বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে নারাভানে জানান, ‘প্যাংগং হ্রদ থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার পরও দুই দেশ কিন্তু লাদাখ সীমান্তে সেনা মোতায়েন সংখ্যা কমায়নি। এখনও লাদাখ সীমান্তে দুই দেশের ৫০ থেকে ৬০ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে।ভারতীয় সেনারাও সবসময় সজাগ ও সতর্ক রয়েছে। এখন সবকিছু ঠিকঠাক রয়েছে বলে আমরা যেন আত্মতুষ্টিতে না ভুগি। আমাদের সবসময় পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতেই হচ্ছে। চিনা সেনারা কী করছে, সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে।চিনা সেনাদের রোটেশন পদ্ধতির ওপর আমাদের নজর রয়েছে। ওদের সেনাবাহিনীর নতুন ইউনিট আসতেই পারে।তাই বলে এমনটা নয় যে সেনাবাহিনীর পুরনো ইউনিটটিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’
একইসঙ্গে দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত সমস্যা মেটাতে আলোচনার প্রক্রিয়াকে চালু রাখার ক্ষেত্রে জোর সওয়াল করলেন সেনা প্রধান। তিনি জানান,‘দুই দেশের মধ্যে প্রত্যেক দফায় আলোচনার পরই যে ইতিবাচক ফল আসবে, সেটা নাও হতে পারে। প্যাংগং হ্রদের দুই তীর থেকে সেরা সরানো সম্ভব হয়েছিল অনেকগুলি দফায় কথা বলার পর। দুই দেশের মধ্যে দ্বাদশ দফায় কথা চলবে।ক রোনা পরিস্থিতির কারণে হয়ত একটু সময় লাগছে। কিন্তু আলোচনা প্রক্রিয়া চলবে।’
ইতিমধ্যে ভারতীয় সেনার তরফে হট স্প্রিং, গোগরা ও ড্যাপসাংয়ের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। এই সব জায়গায় চিনা সেনারা যেভাবে আগ্রাসী ভূমিকা নিয়েছে, তাতে যথেষ্ট সতর্ক ভারত। এদিন সেনা প্রধান এদিনও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, শুধু প্যাংগঙ হ্রদের দুই তীর থেকে সেনা সরিয়ে নিলেই দুই দেশের সীমান্ত সমস্যার সমাধান হবে না। লাদাখ সীমান্তবর্তী সব এলাকা থেকেই সেনা সরাতে হবে।
এদিন সিকিমের নাকু লার সীমান্ত প্রসঙ্গ টেনে সেনাবাহিনীর প্রধান জানান, ওখানে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণই আছে। বড় কোনও হিংসার ঘটনা নেই। সীমান্তবর্তী এলাকায় বেশ কিছু এলাকা রয়েছে, যেখানে দুই দেশের মধ্যে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হতেই পারে।কিন্তু স্থানীয় কামান্ডারদের পারদর্শীতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যায়।
আগ্রাসন সীমান্ত সমস্যা সমাধানের কোনও পথ নয়। আসলে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া সমস্যা সমাধানের পথ হতে পারে। ইতিমধ্যে চিনা সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের বিষয়টিও ভারতীয় সেনাবাহিনীর নজরে এসেছে। সেনা প্রধান জানিয়েছেন, দুই দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে হাজার কিলোমিটার ভিতরে চিনা সেনারা প্রশিক্ষণ শিবির খুলেছে।এটাই প্রশিক্ষণের সময়।
প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত পরিকাঠামোগত ব্যবস্থাও করা হয়েছে। যেভাবে চিনা সেনারা পরিকাঠামো তৈরি করছে, তা আগে দেখা যায়নি। সেই কারণে ভারতেরও উচিত এই সব সীমান্তবর্তী এলাকায় জল সরবরাহ, বিদ্যুতায়ন থেকে শুরু করে পরিকাঠামো তৈরি করা। চিনকে টক্কর দেওয়ার জন্য এটা খুবই প্রয়োজন।