শান্তি শৃঙ্খলা সম্প্রীতি ও অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র রক্ষায় একদল উদ্যমী তারণ্যের ছুটে চলা
ধোবাউড়া প্রতিনিধি: শান্তি শৃঙ্খলা সম্প্রীতি ও অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের বার্তা নিয়ে ছুটে চলছে একদল উদ্যমী তরুণ তরুণী। যাদের লক্ষ্য অসাম্প্রাদায়িক ও সংবেদনশীল সমাজ গঠন করা। বলছি ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা যুব ফোরামের কথা। জানা যায় ১৫ জন ছেলে এবং ১৫ জন মেয়ে মিলে ৩০ সদস্য বিশিষ্ট যুব ফোরাম। যেখানে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং এলাকার সচেতন যুবক যুবতী রয়েছে। তারা প্রায় ১ বছর ধরে সেচ্ছায় উপজেলা জুড়ে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়াচ্ছে। ফোরামের সদস্যরা ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করছে। এলাকায় গ্রামীণ নারীদের সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক উঠান বৈঠক এবং শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষাও কাজ করেছে তারা। তাদের এই যুব ফোরামকে আস্থা প্রকল্পের মাধ্যমে পৃষ্টপোষকতা করছে সুইজারল্যান্ড সরকার। যুব ফোরামের সদস্যদের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সম্প্রীতি আস্থা প্রকল্পের মাধ্যমে ৩ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেখানে সংবেদনশীলতা,অম্প্রদায়িকতা ,যুব সমাজের গুনাবলি, সংস্কৃতি, আন্তঃব্যক্তি যোগাযোগ, সম্পর্ক স্থাপন, নেতৃত্বের গুণাবলী, নাগরিক দক্ষতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য মিজানুর রহমানকে সভাপতি এবং খায়রুল ইসলাম রতনকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ধোবাউড়া যুব ফোরামের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, আমরা বেশকিছু কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে যাচ্ছি। এরমধ্যেই আমাদের সদস্যদের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আগামীদিন গুলো ধোবাউড়া যুব ফোরাম ব্যাপক আকারে কাজ করতে যাচ্ছে। মাদক, বাল্য বিবাহ, শিশু শ্রম, নারী নির্যাতন, ঝরে পড়া শিশুদের স্কুলে ফেরানো সহ নানা ধরনের সচেতনতা মূলক কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি। সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম রতন জানান, সুইজারল্যান্ডের অর্থায়নে আস্থা প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা শান্তি শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে এবং থাকবে। প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক আব্দুল মতিন মাসুদ জানান, আমাদের মূল লক্ষ্য সংবেদনশীল এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলা। এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র। যার উপর সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা নির্ভর করে। অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের মাধ্যমে সুশিক্ষিত,সৎ,যোগ্য ব্যাক্তিকে ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে হবে। সেজন্যই আমরা সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি যাতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সৎ এবং যোগ্য ব্যক্তিকে নির্বাচিত করে। কেউ যেন টাকায় ভোট বিক্রি এবং দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যক্তিকে নির্বাচিত না করে। হাজং জনগোষ্ঠীর বাসিন্দা হৈমন্তী দেবী জানান, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কোল ঘেষেঁ গারো পাহাড়ের পাদদেশে আমাদের এই ধোবাউড়া উপজেলায় হিন্দু মুসলমান, খ্রিষ্টানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করে। আমাদের জন্য সম্প্রীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা নিজেরা সম্প্রীতি বজায় রাখার চেষ্টা করছি। একই সাথে অন্যদেরকে সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
আস্থা প্রকল্পের ডিসট্রিক্ট কো- অর্ডিনেটর ইমন সরকার বলেন, আস্থা প্রকল্পে মাধ্যমে ধোবাউড়া যুব কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণ দিয়েছি। একই সাথে ৩ মাস পর পর তাদের সেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য যুব ফোরামের সদস্যদের নিয়ে সক্রিয়করণ সেমিনার করে থাকি। আস্থা প্রকল্প তাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করবে। আশা করি ধোবাউড়া যুব ফোরাম শান্তি শৃঙ্খলা, সম্প্রীতি ও গণতন্ত্রের প্রয়াস অব্যাহত রাখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।