সিপিডি’র মজুরি প্রস্তাব ষড়যন্ত্রমূলক: বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল শ্রমিকফেডারেশন
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)’র গার্মেন্টস শ্রমিকদের সর্বনিম্ন গ্রেডের জন্য সাড়ে ১৭ হাজার টাকা মজুরির প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশন। ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াসিন এবং সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত সিপিডি’র এ প্রস্তাবকে ষড়যন্ত্রমূলক আখ্যা দিয়ে বাজারদরের সাথে সঙ্গতিরেখে মজুরি বৃদ্ধি দাবির আন্দোলনে সতর্ক ও সচেতন থাকার জন্য গার্মেন্টস শ্রমিকদের প্রতি আহবান জানান। এক যুক্ত বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, সিপিডি’র মজুরি প্রস্তাবের ৫৫ শতাংশ মূল মজুরি এবং মূল মজুরির ৫০ শতাংশ বাড়িভাড়ার প্রস্তাব করা হয়। যদিও সংস্থাটি বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে একটি শ্রমিক পরিবারের প্রয়োজনীয় খাবারের খরচ মাসে ১৬ হাজার ৫২৯ টাকা এবং খাদ্যবহির্ভূত খরচ ১২ হাজার ৮৮২ টাকা বলে দাবি করেছে। কিন্তু এই দাবি অনুুযায়ী মজুরি প্রস্তাব না করে গার্মেন্টস সেক্টরে সাম্রাজ্যবাদী একচেটিয়া লগ্নিপুঁজি এবং তার এদেশীয় দালালপুঁজির প্রতিনিধিত্বকারী গার্মেন্টস মালিকদের স্বার্থে এই দায়সারা মজুরির প্রস্তাব উদ্দেশ্যমূলকভাবে সামনে আনা হয়। জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য বাজারদর অনুযায়ী একটা গ্রহণযোগ্য মজুরির দাবিতে যখন সবাই সোচ্চার তখন সিপিডি’র এই প্রশ্নবিদ্ধ মজুরি প্রস্তাব শ্রমিক অঙ্গণে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। নেতৃদ্বয় বলেন, ২০১৮ সালে ১৬ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে যখন গার্মেন্টস শ্রমিকরা আন্দোলন করছিলো তখনও এ সংস্থাটি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার ২৮ টাকা করার প্রস্তাব করেছিলো। যার ফলে তৎকালীন সময়ে সরকার ও মালিকগোষ্ঠী ৮ হাজার টাকার একটি প্রহসনমূলক মজুরি নির্ধারণ করে।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় আরো উল্লেখ করেন, সিপিডি একেকটি শ্রমিক পরিবারের গড় সদস্যসংখ্যা ৩ দশমিক ৭ হিসেবে গণনা করেছে। তার মধ্যে উপার্জনক্ষম সদস্য দেখিয়েছে ২ জন। অথচ প্যারেন্ট কেয়ার এক্ট-২০১৩ অনুযায়ী প্রত্যেক পরিবারের বাবা-মা কে সন্ত¡ানদের ভরণ-পোষণ দেয়া বাধ্যতামূলক বিধায় পরিবারের সদস্য সংখ্যা অন্তত ৬ জন ধরে মজুরির হিসাব করা হয়। একই সাথে হাউজ হোল্ড ইনকাম এক্সপেন্ডিচার সার্ভে-২০১৬ অনুযায়ী উপার্জনক্ষম পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১.৩৩ ধরা হয়েছে। নেতৃদ্বয় ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, ইতিমধ্যে গার্মেন্টস সেক্টরের মজুরিবোর্ডের মেয়াদ ৬ মাস অতিক্রান্ত হচ্ছে এবং বোর্ডের ৩টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখনো পর্যন্ত বোর্ডে মজুরি প্রস্তাব উত্থাপিত হয় নি। বরঞ্চ প্রায় বছরখানেক আগে থেকে শ্রমিকদের উত্থাপিত ২৫ হাজার টাকা মজুরীর প্রস্তাব আমলে না নিয়ে সিপিডি’র এই মজুরি প্রস্তাবের মাধ্যমে মজুরি নিয়ে মালিকগোষ্ঠীর সূক্ষ ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হচ্ছে। মালিকরা একদিকে মজুরি ঘোষণা করতে “বিলম্ব কৌশল” অবলম্বন করছে, আরেকদিকে সাম্রাজ্যবাদী একচেটিয়া লগ্নিপুঁজির সৃষ্ট দালাল কথিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডিকে দিয়ে মজুরির দাবিকে বিভ্রান্ত করে মজুরির আন্দোলনকে দূর্বল করার হীন তৎপরতা চালাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সমস্ত ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত উন্মোচন করে বাজারদরের সাথে সঙ্গতিরেখে নি¤œতম মজুরির দাবি অগ্রসর করে নেয়ার জন্য নেতৃদ্বয় গার্মেন্টস শ্রমিকদের প্রতি আহবান জানান।
(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)