অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল-২০২৩’ বাতিলের দাবিতে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সমাবেশ
জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল-২০২৩’ বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সাম্রাজ্যবাদী লগ্নিপুঁজি ও দালালপুঁজির স্বার্থ রক্ষায় জনস্বার্থের অজুহাত তুলে আন্তর্জাতিক ও জাতীয়ভাবে স্বীকৃত শ্রমিকের ধর্মঘট করার অধিকার হরণের হীন তৎতপরতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবানে ১০ মে সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি চৌধুরী আশিকুল আলম। সংগঠনের যুগ্ম-সম্পাদক তফাজ্জল হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম ভূইয়া, বাংলাদেশ স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি খলিলুর রহমান, বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট মিস্টি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক বাবুল মিয়া, ঢাকা পোষাক প্রস্তুতকারক শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম মানিক, ঢাকা মহানগর পাদুকা শিল্পী শ্রমিক সংঘের আহাবায়ক ইছহাক মিয়া, বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার এসোশিয়েশনের যুুগ্ম-সম্পাক আবু সাঈদ মাস্টার। এছাড়াও সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির।
সমাবেশে বক্তারা বলেন অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল আইনে পরিণত হলে পরিষেবা খাতের সাথে যুক্ত শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া নিয়ে আইন অনুযায়ী ধর্মঘট ডাকতে পারবে না। অথচ বাংলাদেশ শ্রম আইনে ধর্মঘট করার অধিকার প্রদান করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, দাবি আদায়ে শ্রমিকদের ধর্মঘট করার অধিকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। পরিষেবা আইনের মাধ্যমে সরকার শ্রমিকদের ধর্মঘট ও ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার সংকুচিত করতে চায়।
এই আইনের মাধ্যমে জনস্বার্থের অজুহাত তুলে যে কোন খাতকে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা খাতের অন্তর্ভুক্ত করার নিরঙ্কুস ক্ষমতা সরকারকে দেওয়া দেওয়া হয়েছে। দেশের প্রচলিত শ্রমআইনের সাথে এই বিল যেমন সাংঘর্ষিক তেমনি এই অগণতান্ত্রিক বিলের মাধ্যমে শ্রমিকদের রক্তঝরা সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত অধিকারকে হরণ করা হচ্ছে। সরকারের এই উদ্যোগ চরম স্বৈরচারী মনোভাবে প্রকাশ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে সরকার গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের অধিকার হরণ করে এখন শ্রমিকদের দাবি ও অধিকার আদায়ে শ্রমআইন স্বীকৃত ধর্মঘটের অধিকার হরণ করে শ্রমিকদেরকে প্রাণহীন যন্ত্রের মতো উৎপাদনের উপাঙ্গে পরিণত করতে চায়।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন ধর্মঘট মালিক শ্রেণিকে অসহায় করে আর শ্রমিক শ্রেণিকে শ্রেণি চেতনায় আরো সচেতন করে তোলে। ঐক্যবদ্ধ হতে শিক্ষা দেয়। তবে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক দাবি আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে ধর্মঘটকে না দেখে মজুরি দাসত্ব থেকে মুক্তির মূল লক্ষ্যের সাথে ধর্মঘটকে যুক্ত করতে হবে। নেতৃবৃন্দ অত্যাবশকীয় পরিষেবা বিল প্রত্যাহারে সরকারকে বাধ্য করা করার জন্য শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধর্মঘটের পথে অগ্রসর হওয়ার আহবান জানান। ধর্মঘট করেই ধর্মঘট নিষিদ্ধের বিল প্রত্যাহার করাতে হবে। শ্রমিক শ্রেণির বিরুদ্ধে খড়্গ হাতে স্বৈরাচারী সরকারের এই অপতৎপরতা রুখতে জাতীয় ভিত্তিক ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনের বিকল্প নেই।
প্রেসবিজ্ঞপ্তি