অনলাইন ওয়েবসাইট দ্যা টুলেট নিয়ে এগিয়ে যাওয়া পাঁচ তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন পূরণের গল্প
ডেস্ক রিপোর্ট:
সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের কারনে দেশে ডিজিটাল সেবার চাহিদা বাড়ছে। তরুণ তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উদ্যোক্তারা সরকারের ডিজিটাল রুপান্তরে নানা উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসছেন। এমনি একজন তরুণ উদ্যোক্তা হচ্ছেন অমিত ঘোষ অন্তু। মাত্র ২০ বছর বয়সে শুরু করেন বাংলাদেশে বাসা ভাড়ার সবচেয়ে বৃহত্তর অনলাইন ওয়েবসাইট দ্যা টুলেট।
গতানুগতিক পড়াশোনায় যখন মানুষ তার স্বপ্ন দেখা শুরু করে নিজেকে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার তখন তিনি তার পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে ফেলেন। দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্নকে ছোঁয়ার আসায় পরিবার, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সকলের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে শুরু করেন নিজের স্টাট আপ এবং তৈরি করেন বাংলাদেশে বাসা ভাড়ার সবচেয়ে বৃহত্তর অনলাইন ওয়েবসাইট দ্যা টুলেট।
জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার মুক্তার পাড়ায় অমিতের বেড়ে উঠা। মাত্র ৯ বছর বয়সে বাবা অঞ্জন ঘোষকে হারিয়ে একমাত্র সন্তান হিসেবে বড় হয়ে উঠেন মা ধৃতি রানী ঘোষের হাত ধরে।
অমিত ঘোষ অন্তুর সাথে এক আলাপচারিতায় উঠে আসে তার ওয়েবসাইট তৈরির গল্পটি।
কবে থেকে ওয়েবসাইট তৈরির চিন্তা মাথায় আসে এমন প্রশ্নের জবাবে অমিত ঘোষ বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে আমি ফেসবুক ব্যবহার করি। তখন থেকেই ওয়েবসাইট তৈরির স্বপ্ন মাথায় জেঁকে বসে। এরপর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে পড়তে হয় নানা জটিলতায়। আসে বাধা-বিপত্তি। অতঃপর সব বাধা পেরিয়ে ২০১৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষার পর পরিবারের দ্বিমতের মুখে ঢাকা শহরে পাড়ি জমাই। পরে সব চিন্তা বাদ দিয়ে কোডিং শিখতে বিদেশী প্রফেশনাল প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে সফল ভাবে ওয়েবসাইট তৈরির কোর্স সম্পন্ন করি, বলছেন এই তরুণ।
স্বপ্নবাজ তরুণ অমিত বলেন, ২০১৬ সাল থেকেই দ্যা টুলেট ফ্যামিলি-বাসা, ব্যাচেলর-বাসা, অফিস, হোস্টেল, সাবলেট, মেস অর্থাৎ ভাড়া সংক্রান্ত সকল সমস্যা সমাধানের একটি অনলাইন ভিত্তিক প্রচেষ্টা। যেটি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ের একটি অংশ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। এটি ব্যবহার করে অনলাইনের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় কম পরিশ্রমে খুব সহজেই বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়া পাবে। এছাড়াও আ্যপের মাধ্যমে ব্যবহার করতে ‘দ্যা টুলেট’ অ্যাপ্লিকেশনটি গুগল প্লে-স্টোর থেকে খুব সহজেই ডাউনলোড করে নিতে পারবে।
নামকরণ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, শুধু মাত্র ভাড়া সংক্রান্ত বিষয়গুলোর সমস্যা সমাধানে কাজ করার উদ্দেশ্যে ‘দ্যা টুলেট’ প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নতুন একটি নাম দিয়ে মানুষের জটিলতাকে বৃদ্ধি করতে না চাওয়ায় দ্যা ‘টুলেট’ নামটি রাখা হয়েছে।
দ্যা টুলেট ওয়েবসাইটে অমিতের সাথে চিফ কাস্টোমার অফিসার হিসেবে আঁখি রানি দাস তিতলি, কমিউনিটি ম্যানেজার হিসেবে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান,চিফ অপারেটিং অফিসার হিসেবে মোঃ শাহীন আলম, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপার হিসেবে পঙ্কজ কুমার কাজ করছেন।
অমিত জানিয়েছে, ছয় বছরে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ ওয়েবসাইট দেখেছে ৩ কোটি বারের বেশি। দ্যা টুলেটের ব্যবহারকারীদের সংখ্যা প্রায় ২ লাখের বেশি। আর প্রতিনিয়ত এর সংখ্যা বেড়েই চলছে। অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করছেন প্রায় পনের হাজার মানুষ। এখন অ্যাপটিকে অ্যাপল ষ্টোরে বের করার প্রস্তুতি চলছে।
তিনি আরও বলেন,আমি এবং আমার দ্যা টুলেট পরিবারের সদস্যরা স্বপ্ন দেখে দ্যা টুলেট ব্যবহারের মাধ্যমে বাসা ভাড়ার লিফলেটবিহীন হবে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি রাস্তা এবং বাসার দেয়াল।