ঈদ আনন্দে স্বস্তি-অস্বস্তি
ডয়চেভেলে প্রতিবেদনঃ জীবিকার টানে শহরমুখো হতে হয়৷ কিন্তু শহর যেন কখনো আপন হয় না, হয় না ‘দেশ’ও৷ এখনও তাই অনেকের কাছে শহর যেন অনেকটা বিদেশ আর ‘দেশ’ মানেই গ্রাম৷
সেই আপন ‘দেশে’ না ফিরলে অনেকেরই ঈদ হয় না, পায় না উৎসবের পরিপূর্ণতা৷ তাই ঈদের ছুটিতে শহর ছেড়ে মানুষ দলে দলে পাড়ি জমান নাড়ির টানে, ‘দেশের’ পানে৷
জীবিকার টানে শহরমুখো হতে হয়৷ কিন্তু শহর যেন কখনো আপন হয় না, হয় না ‘দেশ’ও৷ এখনও তাই অনেকের কাছে শহর যেন অনেকটা বিদেশ আর ‘দেশ’ মানেই গ্রাম৷
জীবিকার টানে শহরমুখো হতে হয়৷ কিন্তু শহর যেন কখনো আপন হয় না, হয় না ‘দেশ’ও৷ এখনও তাই অনেকের কাছে শহর যেন অনেকটা বিদেশ আর ‘দেশ’ মানেই গ্রাম৷
সেই আপন ‘দেশে’ না ফিরলে অনেকেরই ঈদ হয় না, পায় না উৎসবের পরিপূর্ণতা৷ তাই ঈদের ছুটিতে শহর ছেড়ে মানুষ দলে দলে পাড়ি জমান নাড়ির টানে, ‘দেশের’ পানে৷
কত মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে যান বাংলাদেশে তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়াটা সহজ নয়৷ তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের নেটওয়ার্ক পরিবর্তনে কিছুটা ধারণা মিলছে৷ ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বরাতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য বলছে পাঁচ দিনে এক কোটি সিম ঢাকা ছেড়েছে৷ শুধু ঢাকা নয়, বাংলাদেশের অন্যান্য শহর থেকেও মানুষ ঈদ করতে পাড়ি জমাচ্ছেন গ্রামে৷
কিন্তু সেই পাড়ি জমানোটা কখনোই স্বস্তির হয় না ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য৷ বছর বছর নতুন ঈদ আসে কিন্তু পত্রিকার পাতায়, টিভি পর্দায় মানুষের ভোগান্তির একই চিত্রের দেখা মেলে৷ রেল, লঞ্চে ভয়ানক ঝুঁকি নিয়ে যাত্রা করতে বাধ্য হন খেটে খাওয়া মানুষজন৷ আর এই পরিস্থিতিই বজায় থাকুক তা হয়ত কারো কারো জন্য কাঙ্খিতই৷ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাব বলছে ঈদে অতিরিক্ত আট হাজার কোটি টাকা লুটে নেন পরিবহণ মালিক ও চাঁদাবাজরা৷ তাদের তথ্য অনুযায়ী, ৬০ কোটি ট্রিপের মাধ্যমে সড়ক, ট্রেন, বাস ও বিমানে ৩০ হাজার কোটি টাকা ভাড়া আদায় হয়৷ তার মধ্যে আট হাজার কোটি টাকা আদায় হচ্ছে অন্যায়ভাবে৷ তারপরও নির্বিবাদে মানুষ বাড়ি পৌঁছাতে চান তার সর্বস্ব দিয়ে হলেও৷ স্বস্তির বিষয় এবার অন্তত বড় ধরনের যানজট থেকে নিস্তার মিলেছে৷
শুধু পরিবহণ নয়, রোযা-ঈদ মিলিয়ে অসাধু ব্যবসায়ী, সুযোগসন্ধানীদের শিকারে পরিণত হন সাধারণ মানুষ৷ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শুরু করে সবকিছুরই যেন ভেলকি লাগে৷ এবার নতুন সংযোজন ঈদের আগে বাজার থেকে তেল উধাও হয়ে যাওয়া৷
তারপরও মহামারির শুরুর পর এবারই মানুষ বিধিনিষেধহীন এক ঈদ আনন্দ উদযাপন করতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের৷ তা দেশের অর্থনীতিতেও গত দুই বছরের চেয়ে বাড়তি মাত্রা যোগ করবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷
শহরে কাজ করা মানুষটি পরিবারের জন্য নতুন পোশাক কিনে বাড়ি ফিরেছেন৷ প্রবাসে থাকা সদস্যটি পরিবারের ঈদ উদযাপন আনন্দদায়ক করতে বাড়তি টাকা পাঠিয়েছেন৷ এই অর্থের প্রবাহ গ্রামীণ অর্থনীতিকে আবারও চাঙা করে তুলবে৷
তারপরও ভুলে গেলে চলবে না এদেশে এখনও বিপুল মানুষ দারিদ্র্য রেখার নীচে বসবাস করেন৷ গত দুইবছর করোনা নতুন করে অনেককে সেই কাতারে নামিয়ে এনেছে৷ ঈদ আনন্দ তাই সবার দুয়ারে হাজির হবে সেটি বলা চলে না৷ যেমনটা হয়ত পৌঁছাবে হাওরে বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে যাওয়া কৃষকের কুটিরেও৷ এই আনন্দে তাদের কথা কি আমরা মনে রাখছি?