অন্যান্যজাতীয়রাজনীতি

ওসি বলেন, ছাত্ররা আসতেছে। হুজুররা আসতেছে।

স্টাফ রিপোর্টার: ময়মনসিংহ নগরীর থানাঘাট এলাকায় হযরত শাহ সুফি সৈয়দ কালু শাহ (রহ.)এর মাজার ও সামা কাওয়ালি অনুষ্ঠানে বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় মামলা অথবা লিখিত অভিযোগ করা হয় নি। তবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ সফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বড় মসজিদ জামিয়া ফয়জুর রহমান (রহ.) মাদ্রাসার ছাত্ররা কাওয়ালির মঞ্চে ভাঙচুর চালিয়েছে। এ সময় বেশ কিছু চেয়ার ভাঙচুর করা হলেও কেউ আহত হয়নি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গতকাল রাতের ভাংচুরের ঘটনা বর্ণণা দিতে গিয়ে ময়মনসিংহ আহলেবাদ জিন্দাবাদ সুফিবাদ ঐক্যপরিষদের সভাপতি পীরবাবা খলিলুর রহমান চিশতি নিজামী বলেন,গত ৮ জানুয়ারি মাগরিববাদ হযরত শাহ সুফি সৈয়দ কালু শাহ (রহ.)এর ১৭৯তম ওরশ মোবারকে দোয়া মিলাদ মাহফিল আয়োজন সম্পন্ন করি। পরে পাশে সামা কাওয়ালির গানের অনুষ্ঠান শুনছিলাম। রাত ১১ টায় কোতোয়ালি থানার ওসিসাব আসলেন। সরাসরি এসে স্টেজে উঠে গান বন্ধ করতে বলেন। সাথে সাথে গান বন্ধ করে দেয়া হয়। ওসি বলেন,ছাত্ররা আসতেছে। হুজুররা আসতেছে। এ সময় সাথে সাথে গান বন্ধ করে দেয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, এক সঙ্গে একটা ঢেউয়ের মতো এসে সব তছনছ করে ফেললো। ৪৫ বছর ধরে এ সময়ে হজরত শাহ সুফি সৈয়দ কালু শাহ (রহ.)-এর মিলাদ মাহফিল, ‘দোয়া ও সামা কাওয়ালি’ অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। কোনো দিন এমন হয়নি। বুধবার রাতে যখন খাজাবাবার গান পরিবেশন করা হচ্ছে,তখন বড় মসজিদের ছাত্ররা এসে ভাংচুর চালায়। এ সময় প্লাস্টিকের চেয়ার,সাউন্ড সিস্টেম ও মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়। এ সময় হারমোনিয়াম বাদক মো: কাদির আহত হয়। তাঁর পায়ের হাড় ফেটে যায়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, প্রায় শতাধিক লোক নগরীর থানাঘাট ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে হযরত শাহ্‌ সুফী সৈয়দ কালু শাহ (রা.)-এর সামা কাওয়ালি অনুষ্ঠানস্থলে নারায়ে তাকবীর বলে হামলা-ভাঙচুর চালায়। এ সময় মঞ্চ ও শতাধিক চেয়ার এবং সাউন্ড সিস্টেম ভাঙচুর করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান,রাত তিনটার দিকে বড় মসজিদের মুসল্লিরা রোড ব্লক করে শাহ সুফি সৈয়দ কালু শাহ (রহ.)-এর মাজার ভাংচুর করে এসময় অতি নিকটে পুলিশ সদস্যরা থাকলেও কেউ বাধা দেয় নি। মাজারের ভেতর আল কোরআনসহ অন্যান্য কিতাব নষ্ট করা হয়। সিন্দুক ভেঙ্গে টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। টিনসহ আরো কিছু জিনিসপত্রে আগুন ধরানো হয়।