অন্যান্য

কুড়িগ্রামে কৃষকের মাথায় হাত! ইটভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে ধান

কুড়িগ্রামে ইটভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে ধান

নয়ন দাস:

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের কুটিরচর এলাকায় ইটভাটার কাছে ধানখেতের পাশে নষ্ট হওয়া ধান দেখছেন এক কৃষক।কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের কুটিরচর এলাকায় ইটভাটার ধোঁয়ায় ২০ বিঘা জমির বোরো ধান নষ্ট হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। ইটভাটাটি দ্রুত উচ্ছেদের দাবি জানান ভুক্তভোগী কৃষকেরা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের কুটিরচর এলাকায় আবাদি জমির পাশেই স্থাপনা করা হয়েছে এনএমবি নামে একটি ইটভাটা। ভাটার চারদিকে চাষ করা হয়েছে বোরো ধান। ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় জমির ধানগুলো ঝলসে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগি কৃষকেরা অভিযোগ করেন, খেতের বোরো ধানে পাক ধরেছিল। আর কয়েক দিন পর কাটার মৌসুম। কিন্তু কয়েক দিন ধরে দেখা যায়, কুটিরচর, চরবন্দবেড় এলাকায় বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসে ঝলসে যাচ্ছে জমির ধান।

পরে তাঁরা বুঝতে পারেন ফসলি জমির পাশে অবস্থিত এনএমবি ব্রিককস ইটভাটার ধোঁয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ২০ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছে। যেখানে বিঘা প্রতি ৩০-৪০ মণ পর্যন্ত ধান পাওয়া যেত, সেখানে এখন ৪-৫ মণ ধান পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই।

চরবন্দবেড় গ্রামের কৃষক হাবিল উদ্দিন জানান,‘আমি চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। ইটভাটার কারণে ধানের ক্ষতি হয়েছে। ধান নষ্ট হয়ে গেলে আমরা খাবো কী। আমি একদম অসহায় হয়ে পড়েছি। ’

তিনি আবারও বলেন, ‘এ এলাকায় ইটভাটা স্থাপনের পর থেকে শুধু বোরো ধানের খেতই নয়, ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে আশপাশের গ্রামের ফলদগাছসহ বিভিন্ন সবজির খেত।’

কুটিরচর গ্রামের শাহাজাহান মিয়া ও খঞ্জনমারা গ্রামের কৃষক নুরুল আমিনসহ অনেক জানান, ‘যে ধানগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সে ধানগুলো যদি আমরা না পাই তাহলে সারা বছর চাল কিনে খেতে হবে। ইটভাটাটি দ্রুত বন্ধের দাবি জানান তারা।’

গ্যাস ও বিষাক্ত ধোঁয়ায় ফসল নষ্ট হয়েছে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে এনএমবি ইটভাটার মালিক নজরুল ইসলাম জানান, ‘আমার ইটভাটা, অনেক বেশি টাকার ভাটা এবং আপডেট ভাটা। এটা ফসল ক্ষতি করার কোনো অবস্থানেই নেই। এই ভাটার ধোঁয়ার কারণে ফসল ক্ষতি হয় নাই।’

রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী জানায়, ‘এটি ব্যাকটেরিয়া লিভডাই (বিএলডি) জাতীয় রোগ। হঠাৎ করে অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। গ্যাস ও ধোঁয়া কিংবা সূর্যের অতিরিক্ত তাপেও হতে পারে। তবে এ রকম লক্ষণ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে এর প্রতিকার করার ব্যবস্থা করা যেতো বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।’

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফুল আলম রাসেল জানায়, ‘এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *