অন্যান্যজাতীয়

গৌরীপুর-ঢাকা সড়কে বাস চলাচল বন্ধ; ব্রিজের মোড়ে বাসযাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ায় তীব্র অসন্তোষ

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :ঢাকা-গৌরীপুর সড়কে বাস চলাচল রোববার (৩০জুন/২০২৪) বন্ধ হয়ে গেছে। শনিবার ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া ধূমকেতু পরিবহনের যাত্রীদের ময়মনসিংহ ব্রিজে মালিক সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের শ্রমিকরা নামিয়ে দেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে গৌরীপুর মালিক ও শ্রমিকরা রোববার গৌরীপুর থেকে ঢাকা সড়কে চলাচলকারী বাস সার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছেন।

রোববার ঢাকা বাসস্টেশনে ধূমকেতু পরিবন ও মান্নান পরিবহনের কোথাও কোনো টিকেট বিক্রি হয়নি; ফলে সোমবার গৌরীপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে কোনো বাস ছেড়ে যাবে না। ধূমকেতু পরিবহনের সামনে কথা হয় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রনক জাহানের সঙ্গে। তিনি বলেন, কোনো নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ বাস সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া আমাদেরকে চরম দুর্ভোগে ফেলেছে। গৌরীপুর রির্পোটার্স ক্লাবের সাবেক সভাপতি মহসিন মাহমুদ শাহ যুগান্তরকে বলেন, রোববার ভোর ৪টায় এসেছি। অগ্রিম টিকেট কেটেছি। আসার পর ফলে বাস যাবে না। এতে আমার ছেলের ক্ষতি হয়েছে, নির্ধারিত সময়ে বিশ^বিদ্যালয়ে পৌঁছতে পারে নাই। বোকাইনগর ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম বলেন, শনিবার ধূমকেতু বাসে উঠেছি। ব্রিজে যাওয়ার পর বাস থেকে টেনে হেঁচড়ে আমাদেরকে নামানো হয়েছে। আমার কিডনী সমস্যা ডায়ালসিস করবো, অনয়-বিনয় করার পরেও হেনাস্তা হয়েছি। সতিশার রফিকুল ইসলাম জানান, বাস ছাড়ে ৪টায়, সেই বাস ছেড়েছে সাড়ে ৪টায়। এরপরে ময়মনসিংহ ব্রিজে যেতেই যাত্রীদের নামিয়ে অন্য বাসে উঠানো হয়েছে। মালামাল নিয়ে-পরিবার পরিজন নিয়ে যাচ্ছিলাম। কষ্টের কথা আপনাকে বললেই কি হবে; আমরা তো জিম্মি, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নিকট!

জানা যায়, ধূমকেতু ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান গত ২জুন মালিক সমিতির সদস্য শাহীনুর রহমানের গাড়ি (মান্নান পরিবহন, ঢাকা মেট্টো ব-১৫-৫২৭৫) কে সকাল ৪টায় ও নুরুল ইসলামের গাড়ি (ধূমকেতু পরিবহন, ঢাকা মেট্টো-ব- ১৫-৬৩১২) গাড়িকে সকাল সাড়ে ৪টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়। এ নির্দেশনা অনুযায়ী মান্নান পরিবহনের গাড়ি শনিবার সকাল ৪টায় ও ধূমকেতু পরিবহনের গাড়িটি সকাল সাড়ে ৪টায় ছেড়ে যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মান্নান পরিবহনের বুকিং মাস্টার আরিফ মিয়া। তিনি বলেন, আমি দাঁড়িয়ে থেকে ওই গাড়ী বিদায় করেছি। ধূমকেতু পরিবহনের মালিক মো. নুরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, তাদের বেঁধে দেয়া নির্ধারিত সময়ে গাড়ি ছাড়ার পরেও যাত্রীদের হেনেস্তা করা হয়েছে। যাত্রীরা বাসের শ্রমিকদের মারধর করতে এসেছে। তাই শ্রমিকদের নিরাপত্তা না থাকায় ও যাত্রীদের হেনেস্তা করার কারণে আমরা বাস সার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছি।

এদিকে একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ধূমকেতু ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান একটি গাড়িকে প্রত্যেক দিন ফাস্টটিপ দিতে পারেন না। এখানে সারাজীবন একাধিক গাড়ি হলে পর্যায়ক্রমে ফাস্টটিপ হয়েছে। সারাজীবন এখান থেকে ফাস্টটিপ ৪টায় ও দ্বিতীয় টিপ ৪টা ১০মিনিটে চলছে। গৌরীপুরবাসীর স্বার্থে। এখন এ সময় পরিবর্তন কার স্বার্থে। আরও জানায়, দুটি/৩টি/৪টি গাড়িও চলছে। পর্যায়ক্রমে সবাই ফাস্ট পাওয়া কথা। এখান থেকে চলতো উপজেলা চেয়ারম্যান সোমনাথ সাহার আরও একটি ধূমকেতু গাড়ি। সেই গাড়িও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, নীতি বর্হি:ভূত। রাত ৮টা ১৫মিনিট পর্যন্ত ঢাকার বাস কাউন্টারে কোনো টিকেট বিক্রি শুরু হয়নি।

বাস সার্ভিস বন্ধ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাকিল আহমেদ জানান, বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।