জাতীয়রাজনীতি

ছাত্রদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে কৃষক সংগ্রাম সমিতির সমর্থন; শ্রমিক-কৃষক-জনগণের রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অগ্রসর হওয়ার আহবান

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্রদের ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়ে অবিলম্বে নি:শর্তভাবে সকল গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তি এবং হামলা-মামলা-গ্রেফতার বন্ধ করার আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি। অদ্য (৩ আগস্ট) সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় সভায় এ আহবান জানান নেতৃবৃন্দ। গতকাল হবিগঞ্জে সংঘাতের মধ্যে পড়ে সংগঠনটির একজন সাধারণ সদস্য নিহত হওয়ায় সভায় গভীর শোক প্রকাশ ও তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। একই সাথে স্বৈরতান্ত্রিক সরকার কর্তৃক ছাত্র-গণহত্যার বিরুদ্ধে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লড়াই অগ্রসর করার আহবান জানিয়েছে সংগঠনটি। সংগঠনের সভাপতি হাফিজের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবিরের সঞ্চালনায় সভায় বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কেন্দ্রীয় নেতৃতমন্ডলী বর্তমান ছাত্রআন্দোলনসহ জাতীয়-আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ের উপর বক্তব্য রাখেন। কৃষি সমস্যার প্রেক্ষিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, অকাল বন্যার স্থায়ী সমস্যা সমাধানের প্রেক্ষিতে সারাদেশের নদ-নদী খনন করতে হবে এবং অপরিকল্পিত বাঁধ ও স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। কৃষকদের জন্য কৃষি উপকরণের দাম কমাতে হবে এবং গ্রামাঞ্চলের গরীব কৃষক ও জনসাধারণের জন্য স্বল্পমূল্যে রেশনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ সভায় আরো বলেন, ছাত্রসমাজের মূল সমস্যা হচ্ছে তার শিক্ষা গ্রহণের সমস্যা ও শিক্ষা শেষে বেকারত্বের সমস্যা। দেশের শ্রমিক-কৃষক-জনগণের সন্ত¡ানদের আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় শিক্ষাগ্রহণ থেকে তাদের ব্যাপক অংশ ঝরে পড়ছে। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ফাঁকফোঁকড় দিয়ে যারা উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায়, শিক্ষাশেষে তাদের চাকুরির নিশ্চয়তা না থাকায় এসব শিক্ষিত লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী অভিশপ্ত বেকার জীবন যাপন করছেন। তাছাড়া দেশের জনগণের উপর স্বৈরতন্ত্রের নির্মম দমন-পীড়ন ও শোষণ-লুটপাট তীব্রতর হওয়ায় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়েছে। এর ফলে কোটা সংস্কারের মত একটা মিনিমাম দাবিতে সরকার সহনশীল না হয়ে চরম স্বৈরতন্ত্রের বর্হিপ্রকাশ ঘটিয়েছে, শত শত ছাত্র-শ্রমিক-জনতাকে হত্যা করেছে। নেতৃদ্বয় বলেন, ন্যায়সঙ্গত দাবিতে ছাত্র-জনতার এই আত্মদান স্বার্থক হবে কেবল বৈষম্যমূলক সমাজব্যবস্থার উচ্ছেদ সাধনের মধ্য দিয়েই। স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী সরকারের পরিবর্তে আরেকটি স্বৈরতান্ত্রিক সরকার নয়, স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থাকেই সমূলে উচ্ছেদ করতে হবে। ছাত্র-যুবকদের আন্দোলনের সাথে জনগণের মুক্তির আন্দোলন একসূত্রে গাঁথা। তাই জনগণের মুক্তির লক্ষ্যে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলমান আন্দোলনকে অগ্রসর করার আহবান জানান নেতৃবৃন্দ। ( প্রেস বিজ্ঞপ্তি)