অর্থনীতিকৃষি ও শিল্প

জলঢাকা আগাম ভুট্টা চাষে ব্যস্ত কৃষকেরা

হাসানুজ্জামান সিদ্দিকী হাসান, নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার চর অঞ্চল সব বিভিন্ন এলাকায় আগাম জাতের ভুট্টা চাষে ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা । আগাম জাতের ভুট্টা চাষে পোকা মাকড়ের আক্রমণ এবং রোগ বালাই খুব কম হয়। তাই আগাম আগাম জাতের ভট্টা চাষে ঝুঁকছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা। এ মৌসুমে জলঢাকা উপজেলায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আগাম ৫.৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে। এদিকে ৬ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আগাম ভুট্টা চাষ করায় এর লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর। সোমবার উপজেলার চরঅঞ্চল সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় ভুট্টার বীজ রোপনে কৃষকদের ব্যাস্ত সময় পার করার দৃশ্য।

এদিকে বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানায়, অল্প শ্রম কম খরচ এবং লাভ বেশি হওয়ায় ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে তাদের। তারা আরও জানান, প্রতি শতক জমিতে প্রায় দুই মন করে ভুট্টা উৎপাদিত হয়। এতে খরচের চেয়ে দ্বিগুণ লাভ হয়। শুধু তাই নয়, ভুট্টার কান্ড জ্বালানি ও গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে এর পাতা ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ভুট্টার আটা, মাছের খাদ্য মুরগির খাবার সহ বিভিন্ন কাজে লাগে বলে জানান তারা।

উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের তিস্তার চর এলাকার ভুট্টা চাষী শাহ আলম ও নুর আলম জানান নদীতে বন্যার পানির সঙ্গে জমিতে বালু আসায় এতে করে ইরি বোরো চাষ না হওয়ায় সে জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। অন্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষে জমিতে সার ও পানি বেশি লাগে কিন্তু অন্যান্য ফসল এবং ইরি বোরো ধান চাষের চেয়ে ভুট্টার আবাদে বেশী লাভ হয়।

উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, এবার জলঢাকায় ৬ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আগাম ভুট্টা চাষ করায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। আশা করি আগামীতে ভুট্টা চাষে আরো অনেক বেশি আগ্রহী হবেন কৃষকেরা। উপজেলার বড় তিস্তা ও বুড়ি তিস্তা নদীর চর সহ বিভিন্ন এলাকার জমিতে সারিবদ্ধ সবুজ ভুট্টা গাছ ছেয়ে যাচ্ছে। উপজেলার তিস্তা নদীর চর এলাকায় ভুট্টা চাষ হয় পর্যাপ্ত পরিমাণে।
কৈমারী ইউনিয়নের গাবরোল হাজী পাড়া গ্রামের ভুট্টা চাষী আতিয়ার রহমান ও আশরাফুল ইসলাম বলেল,ভুট্টা চাষে খরচ কম এবং লাভ বেশি এ কারনে আমরা ভুট্টা চাষ করে আসছি।এবার চার বিঘা জমিতর ভুট্টা চাষ করেছি। তাই ভালো ফলনের আশা করছি। এ দিকে ভুট্টা চাষে প্রতিশতকে খরচ হয় ৫- ৭ হাজার টাকা ও বিঘাপ্রতি ফলন হয় ৩০ থেকে ৩৫ মন পর্যন্ত। প্রতি বিঘা ভুট্টা বিক্রি হয় ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা আর খরচ বাদে লাভ হয় ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা। গোলমুন্ডা ইউনিয়নের ভাবনচুর এলাকার ভুট্টা চাষী মশিউর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছি আমরা।

জলঢাকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন আহমেদ বলেন, এ বছর ৮ হাজার একটা জমিতে ভুট্টা চাষ হচ্ছে। এছাড়া আমরা প্রণোদনা সহায়তা হিসেবে ৬৮০ জন কৃষকের মাঝে ২ কেজি করে বীজ,১০ কেজি করে এমওপি ও ২০ কেজি করে সার বিনামূল্যে দিয়েছি। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ যে কোন সমস্যায় কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দিচ্ছেন। এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ভুট্টার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি ।