জাতীয়রাজনীতি

জাতীয় ছাত্রদলের সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন

একটি সর্বজনীন, গণমুখী ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জাতীয় মুক্তি, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে জাতীয় ছাত্রদল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এদেশে সংঘটিত সমস্ত প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এ সংগঠনটির গৌরবোজ্জল ভূমিকা রয়েছে। এসব আন্দোলনে সংগঠনটির অসংখ্য নেতা-কর্মি জেল, জুলুম, হুলিয়া ভোগ করেছেন এবং ছাত্রসমাজের অধিকার ও আকাংখা বাস্তবায়নে আত্মোৎসর্গ করেছেন। শিক্ষাঙ্গণে বিপ্লবী বিকল্প ধারার এই সংগঠনটি চলতি বছরের ২৩ আগষ্ট ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে। দেশে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম তথা শ্রমিক-কৃষক-জনগণের রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের দাবি আরও জীবন্ত ও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। এমনাবস্থায় সংগঠনটিকে পুনর্গঠন ও আরও সুসংহত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উদ্বোধন করা হয়েছে সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি। জাতীয় ছাত্রদলের সভাপতি তৌফিক হাসান পাপ্পু’র সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মধুমঙ্গল বিশ^াসের সঞ্চালনায় সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জাতীয় ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম। ঢাকা কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের কৃতি ছাত্র ‘অনির্বাণ’ এর সদস্য ফরম সংগ্রহ করার মধ্য দিয়ে জাতীয় ছাত্রদলের এ কর্মসূচির উদ্বোধন ঘটে। রাজধানীর গুলিস্তানে অবস্থিত সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সংগঠনের জাতীয় কার্যকরী সংসদের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাবেক সভাপতি প্রকাশ দত্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামল কুমার ভৌমিক ও তফাজ্জল হোসেন এবং কেন্দ্রীয় নেতা শাহজাহান কবির, মামুন আহমেদ খান, সাংবাদিক মঈনুল হোসেন ও মোহাম্মদ আলীসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। কর্মসূচির উদ্বোধক তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, নয়া-ঔপনিবেশিক পাকিস্তানে উগ্র-বাঙালি জাতীয়তাবাদকে কাজে লাগিয়ে নয়া-ঔপনিবেশিক বাংলাদেশ সৃষ্টি করা হয়। এর ফলে জনগণের তিন শত্রু- সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা-দালালপুঁজি বিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পরিণতিতে বাংলাদেশ জন্ম লাভ করেনি। ফলে অর্জিত হয় না প্রকৃত স্বাধীনতা, জাতীয় মুক্তি ও গণতন্ত্র। অর্জিত হয়নি প্রকৃত জাতীয় আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আলাদা হলেও পাকিস্তান আমলে যে সাম্রাজ্যবাদী শোষণের শৃঙ্খলে গোটা পাকিস্তানের জনগণ ও জাতিসত্ত্বাসমূহ শোষিত-নিপীড়িত ছিলো, সেই সাম্রাজ্যবাদের নাগপাশ থেকে এদেশের মানুষ মুক্ত হতে পারেনি। বরং সাম্রাজ্যবাদের দালাল পাকিস্তানের স্বৈরাচারী অবাঙ্গালী (পাঞ্জাবী) শাসকগোষ্ঠীর বদলে ৭১’র পর সা¤্রাজ্যবাদের আরেক দালাল বাঙ্গালী স্বৈরাচারী (রুশ-ভারতের পুতুল সরকার) শাসকগোষ্ঠী তৈরি হয়। অথচ নিপীড়িত জাতি ও জনগণের শত্রু সাম্রাজ্যবাদ ও তার এদেশীয় দুই খুঁটি সামন্তবাদ এবং আমলা-মুৎসুদ্দিপুঁজির শোষণ পাকিস্তান আমলে যে রূপে ছিলো বাংলাদেশ আমলেও তা অব্যাহত থাকে। এ কারণে এদেশে এখনও পর্যন্ত সকল মানুষের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করে একটি জাতীয় গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। বরঞ্চ গরীব-মেহনতী মানুষের সন্তানরা যাতে শিক্ষার সুযোগ না পায় সেজন্য বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা রক্ষায় শাসক-শোষক শ্রেণী ‘শিক্ষা সংকোচন নীতি’ কার্যকর রেখেছে। ছাত্র-জনতার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার জন্য বিভিন্ন কালা-কানুন চাপিয়ে দিয়েছিল। এরকম বাস্তবতাতেই একটি জাতীয় গণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থার দাবিতে জাতীয় ছাত্রদল প্রতিষ্ঠালাভ করছিল। আজকের সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আশা করছি খুব অল্প সময়ের মধ্যে সংগঠনটি সাংগঠনিকভাবে সুসংহত হয়ে জাতীয় মুক্তি, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম দৃঢ়তার সহিত এগিয়ে নিবে।
(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)