জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচীতে আহবান
বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা তথা একটি সর্বজনীন, গণমুখী ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে জাতীয় ছাত্রদলের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানে জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৪ অক্টোবর’২৪ বিকেল ৪টায় সুরমা মার্কেটস্থ এনডিএফ জেলা কার্যালয়ে জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ শান্ত’র সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি রজত বিশ্বাস।উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির যুগ্ন সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়া, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী পটু, জাতীয় ছাত্রদল জেলা কমিটির অন্যতম নেতা রুহুল আমিন, সোলেমান ইসলাম, সোনিয়া আক্তার সহ প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন এদেশের সিংহভাগ জনগোষ্ঠী শ্রমিক-কৃষক ও মেহনতি জনগণ। হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে কৃষকরা সমগ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য উৎপাদন করেন, শ্রমিকরা সমাজ সভ্যতা বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যয় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শ্রমিক-কৃষক-জনগণকেই প্রদান করতে হয়। অথচ দেখা যায়, মেহনতি মানুষের সংসারের অভাবের জন্য তাদের সন্তানদের অধিকাংশকেই শিশু অবস্থাতেই কাজের সাথে যুক্ত হয়ে পড়তে হয়। অনেক শিশুই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায় না। ঔপনিবেশিক শিক্ষানীতি তথা ‘টাকা যার, শিক্ষা তার’- এই নীতি কার্যকর থাকায় গরীব মানুষের সন্তানরা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। অতীতের স্বৈরাচারী সরকারদের মত স্বৈরাচারী আওয়ামলীগ সরকারের সময়েও দেশে লক্ষ লক্ষ ছাত্র-যুবক-তরুণ বেকার হয়েছে। গত কয়েক বছর থেকে ধারাবহিকভাবে বেকারের সংখ্যা উত্তরোত্তর ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্ঠি না হওয়ায় প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ উচ্চ শিক্ষিত ছাত্র বেকার হচ্ছে। গত ৩ বছরে উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করা প্রায় ১৯ লাখ শিক্ষার্থীই বেকার। একদিকে বেকারত্বের অভিশাপ অন্যদিকে একাডেমিক পড়াশোনার সাথে বাস্থব জীবনে চাকরির ক্ষেত্রে মিল না থাকা, শিক্ষার্থীদের এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অন্যদিকে লক্ষ লক্ষ সরকারী শুণ্য পদ থাকলেও সেগুলোতে পর্যাপ্ত নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সরকারী বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে শূণ্যপদ রয়েছে ৫ লক্ষ ৩ হাজার ৩৩৩ টি (প্রথম আলো-৮ ফেব্রæয়ারি’২৪) এসব প্রতিষ্ঠানের শূণ্যপদে প্রয়োজনীয় নিয়োগ প্রদান করা হচ্ছে না। যেসব দপ্তরে সীমিত সংখ্যক নিয়োগ প্রদান করেছে সেগুলোতেও বেপরোয়া ঘুষ-দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ছাত্র-মধ্যবিত্ত জনগণের আন্দোলনে ক্ষমতার পালাবদল হয়। কোটা আন্দোলন পরবর্তী এক দফা আন্দোলন এ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল না। যার পরিণতিতে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। সা¤্রাজ্যবাদী পরিকল্পনায় সৃষ্ট এ পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তার প্রাধান্যকে আরও অগ্রসর করে এবং নয়াঔপনিবেশিক ভারতের অবস্থান দূর্বল হয়। মার্কিনের প্রতিপক্ষ সাম্রাজ্যবাদী চীন ও রাশিয়া স্বীয় লক্ষ্যে তৎপরত রয়েছে। বাংলাদেশে অন্তবর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচিত সরকার সাম্রাজ্যবাদের যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন তাতে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা, বৈষম্য, দুর্নীতি বন্ধ হবে না। ছাত্র-গণহত্যার উপর দিয়ে এক স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পরিবর্তে আরেক স্বৈরতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসলেও ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক-জনগণ কারোই মুক্তি আসবে না। তাই আমাদের দেশে অসমাপ্ত যে জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম তা ঐতিহাসিকভাবে নির্ধারিত শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে অগ্রসর করে নিতে ছাত্র সমাজকে অগ্রণী ও উদ্যোগী ভূমিকা পালনের জন্য ছাত্রসমাজের প্রতি আহবান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি