জাতীয়রাজনীতিস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

দেশে ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ, জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার: গত এক সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ শতকরা গড়ে ৬০ ভাগ বেড়েছে৷ আর দেশে এ পর্যন্ত ওমিক্রনে আক্রান্ত ১০জন চিহ্নিত হয়েছে৷ গত বছর ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার পর টালমাটাল ছিল দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা৷ হাসপাতালে রোগিদের ভিড়, অক্সিজেন সংকটসহ নানা পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে মানুষকে৷ এদিকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ বিশ্বরে নানা দেশে করোনা সংক্রমনের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যাচ্ছে৷ সেই সাথে যুক্ত হয়েছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের আতঙ্ক৷ কয়েক মাসতুলনামূলক কম থাকার পর বাংলাদেশেও গত কয়েকদিন ধরে সংক্রমণের উর্ধ্বগতি লক্ষ করা যাচ্ছে৷ পরিস্থিতি সামলাতে তাই জোর পদক্ষেপের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের৷

গত ডিসেম্বরের ৬ তারিখে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের  হার শতকরা এক ভাগের কাছাকাছি নেমে এসেছিল৷ ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়া এবং কমার মধ্য দিয়ে এই ধারা অব্যহত ছিল৷ ১৮ ডিসেম্বরেও সংক্রমণের হার ছিল শতকরা এক ভাগের কিছু বেশি৷ কিন্তু এরপর থেকে সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকে৷ গত ২৪ ঘন্টায় শনাক্তের হার শতকরা ২.৯১ ভাগে উন্নীত হয়েছে৷

রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন জানান, স্থিতিশীল থাকার পর সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে৷ গত ২০ ডিসেম্বর থেকে দেশে করোনা সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে৷ গত এক মাসের মধ্যে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংক্রমণের মাত্রা ছিল দুই শতাংশের নীচে, অনেক ক্ষেত্রে তা এক শতাংশের কাছাকাছি ছিল৷ গত ২৬ ডিসেম্বর শনাক্তের হার ছিল দুই শতাংশের নীচে৷ তারপর থেকে এখন পর্যন্ত তা দুই শতাংশের নীচে আর নামেনি৷ গত ৩১ ডিসেম্বর শনাক্তের হার বেড়ে  দুই দশমিক ৭৪ শতাংশ হয়৷

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর বিবিসিকে বলেছেন আগামী তিন থেকে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশেও অমিক্রনের সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।

কেন তারা এমন ধারণা করছেন – তা ব্যাখ্যা করে ডা. আলমগীর বলেন, “আমাদের অঞ্চলে এখনো ডেল্টা বেশি – কিন্তু অমিক্রন সেটা সারপাস করে যাবে। গত দুই বছর আমরা যেটা খেয়াল করেছি ইউরোপ আমেরিকায় ছড়ানোর তিন থেকে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে সেটি আমাদের এদিকে আসে।”

“ওসব দেশে অনেক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও যে অসুখের ইনকিউবেশন পিরিয়ড থাকে – সেগুলো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ঠেকানো যায় না। আসাটা দেরি করানো যায় মাত্র। যখন ওদিকে কমতে শুরু করবে, তখন আমাদের এদিকে হয়ত বাড়বে।”

তিনি আরও বলছেন, শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাস দ্বারা যেসব বৈশ্বিক মহামারি হয়েছে, ঐতিহাসিকভাবে তার সবগুলো সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছে।

অমিক্রনে অন্য ধরনগুলোর মতো ফুসফুসে প্রদাহ খুব কম। সেকারণে হয়ত এর সংক্রমণ অনেক বেশি হলেও গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর সংখ্যা কম হতে পারে।

তবে ডা. আলমগীর মনে করিয়ে দেন যে এ অঞ্চলে অমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে আবারও করোনাভাইরাস তার ধরন পরিবর্তন করবে কি না – সেই আশঙ্কার কথা ভুলে গেলে চলবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *