অর্থনীতিজাতীয়

নান্দাইলে পোল্ট্র্রি কোম্পানির সিন্ডিকেটে প্রান্তিক খামারিদের ব্যবসায় ধস

নান্দাইল প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার প্রান্তিক পোল্ট্রী খামারিদের ব্যবসায় ধস নেমে এসেছে। পোল্ট্রি কোম্পানির ফিড, ঔষধ ও মুরগীর বাচ্চার বাজার দর সিন্ডিকেটের কারণে ব্যবসায় এমন ধ্বস নেমে আসার অভিযোগ করেন প্রান্তিক খামারিরা। ফলে পোল্ট্রী খামারিরা তাদের ব্যবসা থেকে সরে আসতে বাধ্য হচ্ছে। এমনকি নতুন উদ্যোক্তরাও পোল্ট্রী ব্যবসায় নামতে ভীতস্থবোধ করছে। সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, নান্দাইল উপজেলার ১টি পৌরসভা সহ ১৩টি ইউনিয়নে সোনালী ২৯৬, ব্রয়লার ৪১৭ ও লেয়ার ১৭১টি পোল্ট্রী খামার রয়েছে। এসব খামারী ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে ব্রয়লার ও সোনালী মুরগীর পোল্ট্রী ফার্ম বেশি রয়েছে। বর্তমান বাজারে পোল্ট্রী খামারে মুরগীর উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় তাদেরকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতে করে লাভের মুখ দেখার পরবর্তীতে লসের ভাগ তথা ক্ষতির সম্মুখীনই হচ্ছে বেশি। ফলে অনেক খামারি ফার্ম চালানো বন্ধ করে দিয়েছে। জানাগেছে, বাজারে মুরগীর মাংসের ধর প্রতি কেজিতে ২/৫ টাকা বাড়লেই পোল্ট্রী কোম্পানির সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা মুরগীর বাচ্চার দর প্রতি পিসে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা এমনকি ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়।

এছাড়া পোল্ট্রী ফিডের দামও প্রতি বস্তায় ২০/৫০ টাকা বাড়ানো হয়। ৫০ কেজির এক বস্তা মুরগীর খাদ্যের দাম সর্বনি¤œ ৩ হাজার ৩শত টাকা। শুধু তাই নয় এদিকে মুরগীর ঔষধের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মুরগীর বাচ্চা ক্রয়, খাদ্য ও ঔষধ খরচ সহ সর্বপরি উৎপাদন খরচের তালিকায় এক কেজি ১০০ গ্রাম সোনালী মুরগী প্রস্তুত করতে ২ মাসে খরচা পড়ে ২৩০/২৪০ টাকা কেজি। আর বাজারে পাইকারী বিক্রী হয় ১৬০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা বা ১৮০ টাকা ফলে প্রতি কেজিতে ৫০টাকা থেকে ৬০ টাকা ক্ষতি হচ্ছে খামারিদের। অপরদিকে ব্রয়লার মুরগীতে প্রতি কেজিতে ২০/৩০ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। তবে কিছুটা লাভের মুখ দেখছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। কিন্তু খামারিরা আছে লসের মুখে।

এ বিষয়ে গাংগাইল ইউপি’র পোল্ট্রী খামারের মালিক ইফেতেকার মামুন বলেন, কোন কারণবশত মুরগীর মাংসের দাম প্রতি কেজিতে ২ টাকা বা ৫টা বাড়লেই, মুরগীর প্রতি পিস বাচ্চার দাম ১০ টাকা ২০ টাকা বাড়ানো হয়। এতে করে সোনালী মুরগীর প্রতি পিস বাচ্চা কিনতে হয় সর্বনি¤œ ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা, আর ব্রয়লার মুরগীর বাচ্চা কিনতে হয় বর্তমান বাজারে ৩৪ টাকা থেকে ৩৭ টাকা। তার উপর পোল্ট্রী খাদ্যের দামও আকাশচুম্বি। ফলে সিন্ডিকেটের কারনে পোল্ট্রী ব্যবসায় ধ্বস নেমে এসেছে। এছাড়া সিংরইল ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, তিন মাসে ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা তাঁর লস হয়েছে। বর্তমানে তাঁর ৮ হাজার ব্রয়লার মুরগী আছে। এ বিষয়ে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ সহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন খামারিরা।

নান্দাইল উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: হারুনর রশীদ বলেন, পোল্ট্রী কোম্পানির সিন্ডিকেটের বিষয়টি তো আমাদের নয়, এটা দেখবে মন্ত্রণালয়। এরপরেও আমরা চেষ্টা করছি, প্রতিবেদন আকারে খামারীদের দাবীগুলো তুলে ধরার।