পূর্বধলায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ
শিমুল শাখাওয়াতঃ নেত্রকোনার পূর্বধলায় রাগীব মুজিব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আতাহার আলী’র বিরুদ্ধে নিয়োগে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি করেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও স্থানীয় সচেতন মহল।
১৯৯৫ ইং সনে উপজেলার পূর্বধলা সদর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর তারাকান্দা গ্রামে ডক্টর আলহাজ্ব রাগীব আলী ও ডক্টর মোহাম্মদ মজিবুর রহমান নামে দুই বন্ধুর অর্থায়নে রাগীব মুজিব উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
প্রতিষ্ঠাতা ও স্থানীয়রা বিদ্যালয়ের খেয়াল না রাখায় ক্ষমতার দাপটে প্রধান শিক্ষক অর্থের বিনিময়ে স্বেচ্ছাচারীতার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সরেজমিনে গিয়ে ৫ জন শিক্ষকের উপস্থিতি মিললেও প্রধান শিক্ষকের তথ্য মতে ১৫ জন শিক্ষক রয়েছেন বিদ্যালয়টিতে। এক সময় ৪শ’র অধিক শিক্ষার্থী থাকলে বর্তমানে ১৫২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষকের অসদাচরনে উপস্থিতি ৫০ অনুর্ধ।
সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ সিফাত উল্লাহ আকন্দ ও স্থানীয় মোঃ দুলাল আকন্দ বিষয়টি নিশ্চিত করে আরো জানান, নুর নাহার নামে নারী ৫ বছর স্বেচ্ছাশ্রমে ঝাড়ুদারের কাজ করলেও নিয়োগের সময় ৮ লক্ষ টাকা দাবি করে তাকে বাতিল করে দেন প্রধান শিক্ষক আতাহার আলী। ২০০৪ ও ২০১৫ সনে রেজুলেশনে সাবেক আরেক সভাপতি ডাঃ হাবিবুর রহমান এর স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতি করে ৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দিলেও গত একমাস পূর্বেও তাদের বিদ্যালয়ে আসতে দেখেনি শিক্ষার্থীরা। তবে গোপনে নিয়োগের বিষয়টি জানাজানি হলে ২/১ দিন নতুন কয়েকজন শিক্ষককে দেখতে পান তারা। নিয়মিত ক্লাস না করানোর ফলে কোন শিক্ষার্থী তাদের নাম বলতে পারে নি।
এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের অসদাচরণের কারণে থেমে আছে বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ। বিদ্যালয়ের ছাদে দেখা মিলেছে আকাশ ব্যান্ড ডিশ এ্যান্টেনা।
স্থানীয় এক অভিভাবক তার ছেলেকে ভর্তি করাতে বিদ্যালয়ে গেলে টাকা কম দেয়ায় প্রধান শিক্ষক বলেন, দিনমজুরের ছেলে শিক্ষিত হওয়ার দরকার কী! এমন বৈরী আচরণে আশে পাশের অভিভাবক তাদের সন্তানদের অন্যত্র পড়াশুনা করাতে বাধ্য হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকের এসব অনিয়ম উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ মজিবর রহমান।
এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আতাহার আলী জানান, তিনি লোক মারফত অভিযোগের কথা জেনেছেন তবে অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জানান, এ বিষয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।