বসতঘর থেকে মা ও স্কুলপড়ুয়া দুই কন্যাশিশুর মরদেহ উদ্ধার-পরিকল্পিত হত্যা;ধারনা পুলিশের
আমিনুল হক সাদী :
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে বসতঘর থেকে মা ও তার স্কুল পড়ুয়া দুই শিশু কন্যার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকালে উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের বাসুরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
তবে এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পুলিশ সুপারের। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক জনকে আটক করা হয়েছে।
নিহতরা হচ্ছেন, ওই গ্রামের সৌদী প্রবাসী মঞ্জিল মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা বেহম (৪২), তার দুই মেয়ে মোহনা (১১) ও বন্যা (৭)।
হোসেনপুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান টিটু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও সাবজনরা জানান, প্রতিদিনের মতো রাতের খাবারের পর সোমবার রাতে দুই মেয়ে মোহনা (১০) ও বন্যাকে (৭) নিয়ে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন, হোসেনপুর উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের কাওনা বাসুরচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের সৌদী প্রবাসী মঞ্জিল মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৪২)।
তাসলিমার মেয়ে মোহনা বাড়ির পাশের বাসুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণিতে ও বন্যা একই স্কুলে ১ম শ্রেণিতে পড়ে।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকালে মোহনার এক সহপাঠি স্কুলের যাওয়ার জন্য মোহনাকে ডাকতে আসে। এ সময় দরোজা ধাক্কা দিয়ে ভিতরে তিনজনের মরদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। এ সময় আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে ঘরের একটি খাটে মা তাসলিমা এবং অন্যটিতে দুই বোন মোহনা ও বন্যার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
শাহেদুল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জানান, সকালে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। তদন্ত করে এর সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আলআমিন, হোসেনপুর সার্কেলের এএসপি সূজনসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। খবর পাঠানো হয় সিআইডির ক্রাইসসিন ইউনিটে। এ ছাড়া আলামত সংগ্রহ করে পিবিআই।
প্রাথমিক ভাবে চাঞ্চল্যকর এই তিন মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানাতে পারেনি পুলিশ। তবে এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড হতে পারে বলে ধারনা করছেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ। ঘটনার কারন বের করতে পোশাকি পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনী কাজ করছে বলেও জানান, তিনি।
গৃহবধূ তাসলিমার স্বামী মঞ্জিল মিয়া ৬ বছর ধরে সৌদী আরব প্রবাসী। স্বামী বিদেশ থাকায় দুই মেয়েকে নিয়ে তিনি স্বামীর বাড়িতে বসবাস করতেন। তার বাবার বাড়ি পাশ্ববর্তি পাকুন্দিয়া উপজেলার নারান্দি নরপুর গ্রামে।
পুলিশ নিহততের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।