অন্যান্য

বাংলাভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭ যথাযথভাবে প্রয়োগের দাবী সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের

মহান শহীদ দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের উদ্যোগে ২১ ফেব্রুয়ারী ময়মনসিংহে অফিস, আদালত, ব্যাংকবীমা, বহজাতিক কোম্পানীসহ সর্বত্র বাংলা ভাষার সর্বোচ্চ প্রয়োগ এবং বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭ যথাযথ বাস্তবায়নের দাবীতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ময়মনসিংহ টাউন হলের প্রধান ফটকের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, বর্তমান বিশ্বায়নের বাস্তবতায় বাংলা ভাষা সুসংহত ও উৎকর্ষতা সাধনের লক্ষ্যে দেশের অভ্যন্তরে সর্বত্র ভাষার সর্বোচ্চ প্রয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ এবং ১৯৮৭ সালে প্রণীত বাংলাভাষা প্রচলন আইন বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই। বক্তাগণ বলেন, মাতৃভাষার অন্তর্নিহিত সার্থকতা সর্বত্র এর যথাযথ প্রয়োগে। নাগরিক হিসেবে প্রাত্যহিক জীবনে ব্যক্তিকেও যেমন মাতৃভাষা চর্চার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করতে হবে তেমনি রাষ্ট্রযন্ত্রকেও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। সকল দপ্তর, আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সকল দাপ্তরিক কাজে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। দেশের আভ্যন্তরীণ দাপ্তরিক পত্রালাপ শতভাগ বাংলায় যেন করা হয়। দাপ্তরিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে শতভাগ বাংলা ব্যবহার করার লক্ষে ১৯৮৭ সালে ‘বাংলা ভাষা প্রচলন আইন’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশের সর্বত্র সরকারী অফিস, আদালত, আধা-সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নথি ও চিঠিপত্র, আইন-আদালতের সওয়াল জবাব এবং অন্যান্য আইনানুগ কার্যাবলী অবশ্যই বাংলায় লিখতে হবে। কিন্তু এই আইনের প্রয়োগ আজ কোথায়? দেশের অভ্যন্তরে ভাষাকেন্দ্রিক বিরাজমান নেতিবাচক চিত্র দেখে জনমনে আজ এই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

বক্তাগণ আরো বলেন, শিক্ষার মাধ্যম একটি জাতির মাতৃভাষার উৎকর্ষ সাধনে অনন্য অবদান রাখে। যদি শিক্ষার মাধ্যম হয় একমূখী অর্থাৎ মাতৃভাষাকেন্দ্রিক। কিন্তুু আমাদের দেশে শিক্ষাদানের মাধ্যম আজ বহুমূখী। এই বহুমূখী শিক্ষা মাধ্যম অপসারণ করে ভাষার উৎকর্ষতার স্বার্থে একমূখী শিক্ষা মাধ্যম একান্ত প্রয়োজন। বিশ্বায়নের এ যুগে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানী বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। কিন্তুু বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানীগুলো ব্যবসা করলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের কার্যক্রমে তারা বাংলা ভাষা ব্যবহার করবে কিনা সে ব্যাপারে কোন দিকনির্দেশনা নেই। ফলে আইনগতভাবে তারা বাংলা ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে ধরাছোঁয়ার বাইরে। অর্থাৎ বহুজাতিক কোম্পানীগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের কার্যক্রমের নথিপত্রে বাংলা ভাষা ব্যবহারে বাধ্য নয়। বহুজাতিক কোম্পানীগুলো যেহেতু বাংলা ভাষাভাষীদের সাথে লেনদেন করে থাকে সেহেতু তারা বাংলাভাষা ব্যবহার করবে না কেন? তাদের গ্রাহক বাংলাদেশের নাগরিকগণই। বাংলাদেশের ভূখন্ডে ব্যবসা করতে হলে বহুজাতিক কোম্পানীগুলো তাদের দৈনন্দিন কাজে বাংলা ব্যবহার করবে এ ধরণের নীতিমালা প্রয়োজন।

বাংলাভাষার মৌলিক দাবীতে আয়োজিত সমাবেশে বীরমুক্তিযোদ্ধা মো: শাহজাহান এর সভাপতিত্বে ও ইমতিয়াজ আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, ডা: এম এ জব্বার, আবু বক্কর সিদ্দিক রুমেল, জহিরুল আমিন রুবেল, আব্দুল হান্নান আল আজাদ, রেজাউল ইসলাম, আরিফুল হাসান, নাজমুল হাসান (রাজু খান), শাহরিয়ার আহমেদ আশিক, সৈয়দ আরমান হোসেন ইমন, রবিন আশরাফী, চিত্রণ ভট্টাচার্য, আবু সাঈফ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ প্রমূখ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি