জাতীয় নিম্নতম মজুরি ঘোষণা ও পরিষেবা বিল প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত
দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি রোধ ও বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে জাতীয় নিম্নতম মজুরি ঘোষণা, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন, সার্বজনীন রেশনিং ব্যবস্থা চালু ও শ্রমিকদের ন্যায় সঙ্গত ধর্মঘটের অধিকার হরণের পাঁয়তারার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার দাবিতে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এর অংশ হিসাবে সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান ও পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম টিটু। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের যুগ্ম সম্পাদক ও বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আক্তারুজ্জামান খান, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জহিরুল ইসলাম বাদল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে জনগণের নাভিঃশ্বাস উঠে গেছে। আয়ের সাথে ব্যয়ের ফারাক আকাশ-পাতাল। তারমধ্যে মালিকগোষ্ঠি তাদের মুনাফার হার ঠিক রাখতে প্রতিনিয়ত শ্রমিক ছাঁটাই করছে। গার্মেন্টস-হোটেলসহ বিভিন্ন শ্রম সেক্টরে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি কাঠামোর মেয়াদ অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও বর্তমান বাজার দরের সাথে সংগতি রেখে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করার কার্যত কোনরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ না করে সরকার মালিকদের স্বার্থে কালক্ষেপন করছে এবং মালিকদের খুশি রাখতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সহ প্রনোদনা প্রদান করছে। আর যে সব শ্রম সেক্টরে নিম্নতম মজুরি কাঠামো ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে তা বাস্তবায়ন করারও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। তাই বাজার দরের সাথে সংগতি রেখে জাতীয় নিম্নতম মজুরি ঘোষণা ও তা দ্রুত বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। সরকার শ্রমিকদের দাবিকে পাশ কাটিয়ে সাম্রাজ্যবাদী লগ্নিপুঁজির সর্বোচ্চ মুনাফা নিশ্চিত ও অবাধ লুটপাটের ক্ষেত্র হিসাবে বাংলাদেশকে ব্যবহার নির্বিঘ্ন করতে শ্রম আইন সংশোধন, অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল আইনে পরিণত করা অপচেষ্টা, নিবর্তনমূলক কালো আইন সাইবার নিরাপত্তা আইন সংসদে পাস সহ বিভিন্ন নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়নের অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। ভূ-রাজনীতিগত গুরুত্বের কারণে বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব তীব্রতর আকার ধারণ করেছে। বাজার ও প্রভাব বলয় পুন:বন্টন প্রশ্নে সাম্রাজ্যবাদীরা বিশ্বব্যাপী যে যুদ্ধপরিকল্পনা করছে তাতে বাংলাদেশকে যুক্ত করার পায়তার চলছে। বাংলাদেশের সাম্রাজ্যবাদীদের দালাল দলগুলি ক্ষমতায় থাকা বা ক্ষমতা আসার জন্য জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে সাম্রাজ্যবাদী প্রভুদের অনুকূল্য পেতে তীব্র প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থেকে দ্বন্দ্ব সংঘাতের সৃষ্টি করছে। যার বলি হচ্ছে সাধারণ শ্রমজীবি মানুষ। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রয়োজন মজুরিসহ শ্রমিকদের জীবন্ত দাবি নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী দেশ-সংস্থা-সরকার-মালিকগোষ্ঠির দালালদের ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের স্বরূপ উন্মোচন করে সকল ধরনে শোষণ-লুন্ঠন, জুলুম-নির্যাতন ও স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে শ্রমিকশ্রেণির নেতৃত্বে জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার লড়াই বেগবান করা।
(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)