জাতীয়

ময়মনসিংহে তথ্যমেলায় নাগরিক তথ্যের জন্য সাত শতাধিক মানেুষের আবেদন করেন

‘তথ্যের অধিকার, সুশাসনের হাতিয়ার, তথ্যই শক্তি, দুর্নীতি থেকে মুক্তি’ শ্লোগানকে সামনে রেখে বৈশাখী মঞ্চ, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদন পার্ক প্রাঙ্গণে জেলা প্রশাসন এবং টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক),ময়মনসিংহের উদ্যোগে ২৮ ও ২৯ নভেম্বর ২ দিনব্যাপী তথ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় সনাক-এর ইয়েস গ্রুপ পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ তথ্য ও পরামর্শ ডেস্ক থেকে দর্শনার্থীদেরকে সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে তথ্যের জন্য আবেদন করার কৌশল এবং তথ্য প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করা হয়। মেলা মাঠ থেকে সাতশতাধিক নাগরিক সরাসরি তথ্য অধিকার আইন প্রয়োগ করে তাদের চাহিত তথ্যের জন্য আবেদন করেছেন। এছাড়াও মেলায় স্টল পরিদর্শন করে সরকারি-বেসরকারি সেবা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন প্রায় দশ সহস্রাধিক নাগরিক।

তথ্য মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে সমাপনী করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফাল্গুনী নন্দী। সনাক সভাপতি শরীফুজ্জামান পরাগ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজিম উদ্দিন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেজিস্টার (কার্ডিওলজি বিভাগ) ডাঃ তারিকুল ইসলাম খান, মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট এ.এইচ. হাবীব খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সনাক সদস্য মোঃ রোকনুজ্জামান ও এসিজি সমন্বয়কারী (ভূমি) আসাদুজ্জামান রুবেল। সমাপণী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণীকারী সকল স্টলকে শুভেচ্ছা স্মারক, সনদপত্র প্রদান, কুইজ, সংসদীয় বিতর্ক, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে ক্রেস্ট ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সেরা তিনজন ইয়েস সাদাত মোঃ সায়েম, সাদিয়া সুলতানা ও আহামদ জুনাইদ কে অনুপ্রেরণামূলক শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।

তথ্য মেলা সমাপণী অনুষ্ঠানে দুর্নীতি প্রতিরোধে তথ্যের অবাধ প্রবাহ ও স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশের গুরুত্ব শীর্ষক আলোচনা সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি), ফাল্গুনী নন্দী বলেন, তথ্য মেলার মাধ্যমে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি সকল সরকারি দপ্তরকে নাগরিকের তথ্য অধিকার বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এবং নাগরিক বান্ধব হওয়ার আহ্বান জানান। তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে জনসচেতনতা তৈরীতে সনাক-টিআইবি’র ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি নাগরিকের তথ্য অধিকারসহ দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজিম উদ্দিন বলেন, তথ্যমেলা আয়োজন তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে সাধারণ নাগরিকের জনসচেতনতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ তৈরী হলে দুর্নীতি অনেকাংশেই কমে যাবে। মেলার মাধ্যমে সেবা গ্রহীতা ও সেবাদাতাদের মধ্যে এক সেতুবন্ধ গড়ে উঠেছে। দুর্নীতর বিরুদ্ধে সহায়ক পরিবেশ গড়ে তুলতে এ মেলা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। জেলা প্রশাসন, ময়মনসিংহ সবসময় তথ্য অধিকার আইন বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে সকল গঠনমূলক উদ্যোগে পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।

তথ্য মেলার সমাপণী দিনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ^বিদ্যালয় ও আনন্দ মোহন সরকারি কলেজের মধ্যে এক প্রাণবন্ত সংসদীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রতিযোগিতায় আনন্দ মোহন কলেজ চ্যাম্পিয়ন ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ^বিদ্যালয় রানার্স আপ হয়।

তথ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী অফিসসমূহ- জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, বাংলাদেশ বেতার, তথ্য অফিস, মৎস্য অফিস, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কর্মসংস্থান ও জনশক্তি, সমাজসেবা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল, বিএডিসি(ক্ষুদ্রসেচ), বিএডিসি(বীজ বিপনণ), পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, ২ ও ৩, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, পাসপোর্ট অফিস, বিটিসিএল. শিক্ষা অফিস, কেন্দ্রীয় কারাগার, জাতীয় মহিলা সংস্থা, কর কমিশনার কার্যালয়, গণপূর্ত বিভাগ, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, পরিবার পরিকল্পনা, তুলা উন্নয়ন দপ্তর, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, এলজিইডি, দুদক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, বিসিক অফিস, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, যুব উন্নয়ন, পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিস, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সিটি কর্পোরেশন, বিআরটিএ, ডা. কে জামান বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল, সনাক, ইয়ুথ এসোসিয়েশন ফর সোসিও ইকোনমিক ডেভলপমেন্ট, পরিবেশ অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ, বাঁধন এবং পরিসংখ্যান অফিস। সনাক-ময়মনসিংহ টিআইবি’র পক্ষ থেকে সকল অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি নাগরিকদের তথ্য প্রদানের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি