অন্যান্য

ময়মনসিংহে মাদকের ব্যাপকতা; ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে খুচরায় তিনশত টাকা

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুচরা ২৫০/- থেকে ৩০০/- টাকায় দিনে দুপুরে বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা। নগরী এবং গ্রামের আশেপাশে একরকম প্রকাশ্যেই মাদক ব্যবসায়ীরা ইয়াবা, মদ বিক্রি করছে। বেড়েছে মোবাইলে জুয়া খেলার হিড়িক। যেখানে এগুলোর সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে উঠতি বয়সসহ সব বয়সের ব্যক্তিরা। ময়মনসিংহের শহরের এর ব্যাপকতা বেড়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাদকসেবির পরিবার ও আক্রান্ত হচ্ছে অন্যান্য পরিবার।

নগরীর গলিগুলোতে সব বয়সের ব্যক্তিদের মোবাইলে জুয়া খেলায় ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় আর সেখানেই চলে মাদক ব্যবসা। বিশেষ করে সানকিপাড়া, আকুয়া, কৃষ্টপুর, বলাশপুর, ভাটিকাশর, পাটগুদাম, র‍্যালী মোড়, কালিবাড়ি, কলেজ রোড,সেনবাড়ি রোড,মাসকান্দাসহ শম্ভুগঞ্জ, চায়না মোড়, চরঈশ্বরদিয়া, চর কালিবাড়ি,চররঘুরামপুর, গুচ্ছগ্রাম প্রভৃতি এলাকাগুলোতে এর বিস্তার হয়েছে। ফলে গ্রামের দিকে দিন আনে দিন খাওয়া পরিবারগুলো আয়ের উৎস পরিবারের কর্তা যখন মাদকে আক্রান্ত হয় এবং পরিবারের উপর টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করে থাকে তখন তারা নিঃস্ব হয়ে যায়।

শুরু হয় পারিবারিক দ্বন্দ্ব। নগরীতে সন্ধ্যার পর বিক্রি চললেও গ্রামের দিকে চলে দিনে দুপুরে। প্রতিটি ট্যাবলেট মাদকসেবিরা কিনছে ২৫০/- ৩০০/- যা কয়েকটা খেলেই নেশাগ্রস্ত হয়। ৫ টা ইয়াবা ট্যাবলেট কিনলে দিনে ১৫০০/- খরচ হয়। আর দৈনিক এ টাকার জন্য মাদকসেবিরা তাদের পরিবারে চাপ প্রয়োগ করে। যা মাসে ৪৫০০০/-(পঁয়তাল্লিশ হাজার) টাকা খরচ হয় মাদকের পেছনে। বাজারের ব্যাগে করে মদও বিক্রি চলে। অনেক পরিবার তাদের পুরুষদের রিহ্যাবে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে নিয়ে আসলেও এলাকায় এসে আবারও মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের পেছনে লাগে এবং তাদের কাছে মাদক বিক্রি করে। এলাকায় তাদেরকে কেউ কিছু বলারও সাহস পায় না। কেননা এলাকাবাসী থেকে জানা যায়, তারা পুলিশ প্রশাসনের সাথে আঁতাত করেই এসব করে।

অথচ প্রতিদিনই কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখার অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীসহ অন্যান্য মামলায় অভিযুক্তরা গ্রেফতার হচ্ছেন। তবুও মাদকের ব্যাপকতা বাড়ছে কেন, এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ শাহ কামাল আকন্দ জানান, ইয়াবা সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় এটির বিস্তৃতি হয়েছে । আসামী গ্রেফতারের বিষয়ে সাধারণ ব্যক্তিরাও আমাদেরকে সহযোগিতা করে থাকেন। কোতোয়ালি পুলিশ, ডিবি, র‍্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চেষ্টা করছে এর ব্যাপকতা কমিয়ে আনার। যে পরিমাণ আসামি ধরা হচ্ছে সেটি ৫% এর ও কম। তৃণমূল পর্যায়ে এটি রোধ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কেননা একজন মাদক ব্যবসায়ী/ একজন মাদক সেবীকে জেলখানায় পাঠানোর পর মাত্র ৩ মাস জেল খেটে এসে সে আবারও সেটাতেই ঝুঁকে পড়ে। এদিকে আমাদের বেশিরভাগ আইনজীবীগণ তাদের জামিনের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন। কিন্তু সকলকেই মাদক ঘৃণা করতে হবে। মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ীগণ জর্জকোর্ট, হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আসে। মাদকের সাজা ২-৩ বছর হলেও রোধ করার পর্যায়ে থাকতো। এছাড়া সকলের মধ্যেই সচেতনতা বাড়াতে হবে।

মাদক শুধুমাত্র একটি জীবনই নষ্ট করে না,একটি পরিবারের সকল স্বপ্ন নষ্ট করে দেয়। এ বিষয়ে সকলকে সচেতনতার মাধ্যমে মোকাবিলা করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *