জাতীয়রাজনীতি

ময়মনসিংহে আগামিকাল বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ডা. এম. এ করিম এঁর শোকসভা

স্টাফ রিপোর্টার:  প্রবীণ রাজনীতিবিদ জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা মুৎসুদ্দি পুঁজিবিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের আপসহীন, অকুতোভয়, দৃঢ়চেতা, সাহসী জননেতা, এবং সাপ্তাহিক সেবা পত্রিকার সম্পাদক ডাক্তার এম. এ. করিম এঁর মৃত্যুতে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ময়মনসিংহ জেলা শাখা আগামিকাল শোকসভার আয়োজন করেছে। ৩ ডিসেম্বর, শুক্রবার বিকাল ৩ টায় মাসকান্দা বাসটার্মিনালে অবস্থিত ময়মনসিংহ জেলা মটরস ওয়ার্কসপ মেকানিক্স ইউনিয়ন কার্যালয়ে এ শোকসভা অনুষ্ঠিত হবে।
শোকসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ধ্র“বতারা সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি শ্যামল ভৌমিক। সভায় আরো আলোচনা করবেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা সভাপতি এডভোকেট হারুন-অর-রশিদ, বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব রব্বানী, ধ্র“বতারা সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি বিমান সরকার, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রী বাবলী আকন্দ ও জাতীয় ছাত্রদলের আহবায়ক সুমাইয়া আক্তার শাপলা। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
শোকসভা সফল করার জন্য জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সভাপতি মাহতাব হোসেন আরজু ও সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন সংগঠনের নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও সকল প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি, ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ডা. এম এ করিম গত ৪ নভেম্বর ২০২১ দুপুর ২:২৫ টায় কভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রয়াত জননেতার মরদেহে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তাঁকে জুরাইন করবস্তানে সমাহিত করা হয়।
ডা. এম এ করিম ১৯২৩ সালের ১৫ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। গণমানুষের চিকিৎসা সেবায় ডাঃ এম.এ করিম অদ্বিতীয় দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী ব্যক্তিত্ব। তিনি আজীবন অত্যন্ত স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে গিয়েছেন। শ্রমিক দিনমজুর নি¤œবিত্তদের চিকিৎসক হিসেবে তিনি ছিলেন সমধিক পরিচিত। তাছাড়া প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মীসহ অন্যান্য রাজনীতিকদেরও তিনি বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করেছেন। অনেক দরিদ্র রোগীদেরকে তিনি বিনা ফিতে শুধু চিকিৎসা সেবা দেননি অনেককে নিজের পকেট থেকে অর্থ দিয়ে ঔষধ এমনকি পথ্য কেনার জন্যও অর্থ দিতেন। তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্রও ছিল অদ্বিতীয়। এদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে তিনি সাম্রাজ্যবাদের মুনাফা লুটার বাজার হিসেবে দেখতেন। তাই তিনি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি হিসেবে বুঝতেন সা¤্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ-আমলা-মুৎসুদ্দি পুঁজি তথা সকল প্রকার শোষণ-শাসনমুক্ত স্বাস্থ্য ও সমাজ ব্যবস্থাকে। আর তাই চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন।
ত্রিকালদর্শী রাজনীতিবিদ ডা. এম এ করিম এক জীবন্ত ইতিহাসের অগ্রসেনা ও ইতিহাসের কালপঞ্জী ছিলেন। প্রায় ৮ দশক জুড়ে রয়েছে তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের সুদূর প্রসারী কর্মতৎপরতা ও সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ১৯৮৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার প্রেসকাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয় জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট। জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন ডাঃ এম. এ. করিম। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *