অন্যান্য

ময়মনসিংহে পরিচালক স্বাস্থ্য বিভাগে টাকা দিলেই অনিয়ম নিয়মে পরিনত হয় : প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা

স্টাফ রিপোর্টার ঃ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নন-মেডিকেল কর্মচারী ও স্বাস্থ্য সহকারীদের অবৈধভাবে পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তদন্তও করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে বিধি ও নিয়ম মেনেই পদোন্নতি হয়েছে। ১৯৮৫ ও ২০১৮ সালের স্বাস্থ্য বিভাগীয় নন-মেডিক্যাল কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী স্বাস্থ্য সহকারী পদ থেকে পদোন্নতি পেয়ে  পরিসংখ্যাবিদ, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর,উচ্চমান সহকারী ও হিসাবরক্ষক হওয়ার  সুযোগ নেই। স্বাস্থ্য সহকারী থেকে শুধু সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক,সিনিয়র স্বাস্থ্য পরিদর্শক,এমটি ইপিআই হওয়া যায়। কিন্তু  স্বাস্থ্য সহকারী থেকে অনেকেই নিয়ম বহির্ভুতভাবে পদোন্নতি নিয়েছেন। জানাজানির পর তদন্ত ও করেছে অধিদপ্তর। তারপর ও ফাঁকফোঁককর দিয়ে পদোন্নতি হয়েছে ঠিকই। তার মধ্যে ময়মনসিংহ  স্বাস্থ্য বিভাগ অন্যতম।

সরকারী নিয়োগবিধি মোতাবেক যে সকল কারণে প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক পদটি বিলুপ্ত হয়। কর্মরত জনবলের চাকুরী হতে অবসর,ইস্তফা,বরখাস্ত,মৃত্যু,বদলী ইত্যাদির কারণে পদগুলো শূন্য হলে পদগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিলুপ্ত হবে। এ পদ সৃজন ও বিলুপ্তরকরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের ০৭/০৪/২০১৬ তারিখে ০৫.০০.০০০০.১৫৯.০২২.১৬-১১৪ নং স্বারকে উল্লেখ করা হয়েছে। তাছাড়া ২৪ মার্চ ২০১৮ সালে গেজেটে উল্লেখ রয়েছে উচ্চমান সহকারী,হিসাবরক্ষক, ক্যাশিয়ার পদ হইতে জষ্ঠেতার  ভিত্তিতে প্রধান সহকারী পদটি বদলীর মাধ্যমে প্রাপ্ত হইতে পারে। যাহা নিয়োগবিধির ৩৩৭৮ পৃষ্ঠায় লিপিবদ্ধ আছে। মোঃ মজিবুর রহমান অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে ০৫/০৮/১৯৯১ সালে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে  প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক পদে ০২/০২/২০১১ সালে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য যে, মোট পদোন্নতির তালিকায় ১৬৫জন রয়েছে কিন্তু রহস্যজনকভাবে একটি প্রধান সহকারী পদ আলাদা করা হয়েছে। বিলুপ্তপদ থেকে কিভাবে  পদোন্নতি হয় প্রধান সহকারী মজিবুর রহমানের । পদোন্নতির তালিকা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের  কর্মচারী নিয়োগ বিধি ১৯৮৫ (ঘড় ও ঝ.জ.ঙ. ৩৬৬.-১ খ/৮৫ উধঃব:১৫/০৮/১৯৯৫) এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে  দুইজন সিকিউরিটি গার্ডকে অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে অর্থের বিনিময়ে। উল্লেখ্য যে,  মোঃ মোকলেছুর রহমান ও মোঃ জাকির হোসেন নিয়োগবিধি মোতাবেক (ক্রমিক ৯৩)অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদ সিকিউরিটি গার্ড হতে পদোন্নতি পাওয়ার কোন সুযোগ নেই।কাজেই পদোন্নতির তারিখ হতে প্রাপ্ত পদোন্নতির স্কেল, টাইমস্কেল ও বেতনাদি আদায়যোগ্য। ০৯/০৭/১৯৯২ সালে সিকিউরিটি গার্ড পদে দুইজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু পরবর্তীতে পদোন্নতি দিয়ে ২২/০৮/১৯৯৭ ও ২৪/০৮/১৯৯৭ সালে অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। গত ০৯/০৯/২০১৫ সালে অডিট এন্ড একাউন্ট অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম সিকিউরিটি গার্ডকে নিয়ম বহিভুতভাবে অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে পদোন্নতি দেওয়ায় তারা বেতনস্কেল গ্রহন করছে এবং তাদের এ কর্মের জন্য  অর্থ  ফেরত ও পূর্বের পদে বহাল রাখার জন্য কর্তৃপক্ষের বরাবরে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
রহস্যজনকভাবে অডিট আদেশ পালন না করে অদৃশ্য শক্তির বলে অনিয়মকেই নিয়মে পরিনত করেছে ময়মনসিংহ  সিভিল সার্জন অফিসে কর্মরত দুই  কর্মচারী । সরকারী আদেশ অমান্য করে অর্থের বিনিময়ে আবার ক্যাশিয়ার পদে  মোঃ মোকলেছুর রহমানকে  ২৯/১১/২০২১  তারিখের মধ্যে যোগদান করার জন্য অফিস আদেশ দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে  মোঃ মোকলেছুর রহমান জানান,  নিয়ম মেনেই পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। সুইপার পদের  কোন পদোন্নতি নেই। পদোন্নতির ব্যাপারে স্যারেরা  বলতে পারবেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তা  আব্দুস ছামাদ জানান, পদোন্নতি বোর্ডের ব্যাপার কিভাবে তারা পদোন্নতি পেয়েছে তা আমি বলতে পারবো না। পদোন্নতির ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে যে এ রকম  অভিযোগ তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে  ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রধান সহকারী  মোঃ মজিবুর রহমান  জানান, এ বিষয়ে আামাদের কাছে কাগছপত্র আছে নিয়ম মেনেই পদোন্নতি পেয়েছি।  সহকারী সিভিল সার্জন ডাঃ পরীক্ষিত কুমার পাড় বলেন,এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। তা তাড়া যদি কেউ অনিয়ম করে সরকারী অর্থ আত্মসাত  করে তাহলে পেনশনের সময় টাকা ফেরত দিতে হবে। এ ব্যাপারে আমার ঊর্দ্ধতন কর্মকতারা বলতে পারবেন।

ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ  নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে জানান, এ ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে পারবো না। আমার ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা আছে তাদেরকে বলেন। উপরিচালক মহোদয় ওই কমিটির সভাপতি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মোঃ শাহ আলম এ প্রতিনিধিকে জানান, ঢাকা ডিভিশন পদায়ন করেছে আমরা কি করবো,ডিজি মহোদয় এ ব্যাপারে বলতে পারবেন। চলতি দায়িত্বে থাকা কর্মচারীকে কমিটি শুধু রেগুলার করেছে। আপনারা ডিজি মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করেন। আমি ঢাকায় আছি, এসে পড়ে বিস্তারিত জানাবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *