যাত্রীবাহী লঞ্চ ও বাস চালুর বিষয়ে সরকারের দ্রুত সুবিবেচনা প্রয়োজন
সম্পাদকীয়:
চলমান লকডাউনে প্রায় দেড় মাস যাত্রীবাহী লঞ্চ ও বাস চলাচল বন্ধ। ফলে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন লঞ্চ ও বাস শ্রমিকেরা। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও বাস চলাচলের দাবিতে ধারাবাহিক বিক্ষোভ সমাবেশ করছে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক ফেডারেশনগুলো। যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলের অনুমতি না দিলে পণ্যবাহী নৌযানের চলা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নৌযান শ্রমিক নেতারা।
লকডাউনের সময় শ্রমঘন পোষাক কারখানার ও অন্যান্য শ্রেণি পেশায় নিয়োজিত শ্রমিকদের মালিকরা কাজ করতে বাধ্য করছে। যেসব সেক্টরে মাসিক ভিত্তিতে মজুরি প্রদান করা হয়, সেখানে মালিকরা বিভিন্ন প্রভাব দেখিয়ে শ্রমিকদের দিয়ে স্বাস্থ্য বিধি লঙ্ঘণ করেও নিয়মিত কাজ করায়ে নিচ্ছে। অথচ যাদের রোজ ভিত্তিতে আয় রোজগার, কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুঃখ কষ্টে দিন পাড় করতে হচ্ছে তাদের। এসব শ্রমিকদের জীবন-জীবিকার জন্য সরকার কোন বিকল্প ব্যবস্থাও করে নি। শ্রমিকরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ত্রাণ ও আর্থিক সহযোগিতার জন্য তালিকা জমা দিলেও বাস্তবিকে শ্রমিকরা এর কোনটাই পায় নি। ফলে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও বাস বন্ধ থাকার কারণে একদিকে যেমন এসব পরিবহনে কর্মরত শ্রমিকরা অভাব অনটনে দিন কাটাচ্ছে, অন্যদিকে নিম্ন আয়ের যাত্রীদের যাতায়াত খরচও বেশি হচ্ছে। এর বিপরীতে ছোট ছোট পরিবহনগুলি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে রাস্তাঘাটে চালু থাকায় বাড়তি মানুষের চাপে হরহামেশায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এরকম ঢিলেঢালা দায়িত্বহীন লকডাউনের কারণে ঈদের আগে পদদলিত হয়ে ৫ জন মানুষের তাজা প্রাণ অকালে ঝরে গেছে। ইতিমধ্যে কঠোর স্বাস্থ্য বিধি কার্যকরি করে লঞ্চ চালুর প্রেক্ষিতে ২২ মে ২০২১ এর মধ্যে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। দেশের শ্রমিক অঙ্গণে এই সংগঠনটি তুলনামূলকভাবে ঐক্যবদ্ধ ও আন্দোলনকামী । এই খাতের শ্রমিকরা কাজের দাবিতে পণ্যবাহী নৌযান বন্ধ করার পর্যায়ে চলে গেলে দেশের গোটা শ্রমিক অঙ্গণে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির আশংকা তৈরি হতে পারে। যা সামাল দেয়া সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। তাই যাত্রী বাহী লঞ্চ ও বাস চালুর প্রেক্ষিতে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।