সনাক ময়মনসিংহ, টিআইবি এর উদ্যোগে অনলাইন মুক্ত সংলাপ
স্টাফ রিপোর্টার ঃ সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), ময়মনসিংহ, টিআইবি এর উদ্যোগে বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সাথে ২৮ জুন ২০২১, বেলা এক টায় এক অনলাইন মুক্ত সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগ: চ্যালেঞ্জ ও করণীয় শীর্ষক এই মুক্ত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা: মোঃ শাহ আলম। এ সময় তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিটি পর্যায়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ময়মনসিংহে শুরুর দিকে এই ভাইরাস কঠোরভাবে মোকাবেলা করা গেলেও বর্তমানে সারা দেশের ন্যায় পরিস্থিতি একটু নিম্নমুখী। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সকলের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। তিনি সকলের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ হতে সকল ধরণের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এই মুক্ত সংলাপে আরো বক্তব্য প্রদান করেন টিআইবি’র সিভিক এনগেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক ফারহানা ফেরদৌস। তিনি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের ডাক্তার, নার্সসহ সকল পর্যায়ের কর্মীদের উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে কার্যক্রম পরিচালনা ও দায়িত্ব পালনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে করোনাকালীন সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করার উপর গুরুত্ব প্রদান করেন।
এর আগে অনলাইন মুক্ত সংলাপে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডা: মো: নজরুল ইসলাম, জামালপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: কে এম শফিকুজ্জামান, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা ডা: শাহজাহান কবীর, মুক্তাগাছার উপজেলার স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা ডা: জান্নাতুল ফেরদৌস, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধি ডা: রেদাউর রহমান খান প্রমূখ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন টিআইবি’র কো-অর্ডিনেটর মো: আতিকুর রহমান। মুক্ত আলোচনায় করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও করণীয় বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা ও সুপারিশ তুলে ধরেন উপস্থিত সেবা গ্রহীতা নাগরিকগণের মধ্যে এডভোকেট মতিউর রহমান ফয়সাল, সনাক-জামালপুর এর সভাপতি অজয় কুমার পাল, ময়মনসিংহ সনাক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন আহম্মেদ, বিশিষ্ট আইনজীবি ও সনাক সদস্য এডভোকেট এ এইচ হাবিব খান, স্বজন সদস্য রোকনুজ্জামান জুয়েল প্রমূখ। এ মুক্ত সংলাপে উঠে আসা সুপারিশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: তথ্যের অবাধ প্রবাহ তৈরী, স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধন, টিকা প্রদান কার্যক্রমে কিভাবে কত সময়ের মধ্যে অধিকসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে নিয়ে আসা যাবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা করা; সকল কারিগরি ত্রুটি দূর করাসহ সকলের জন্য বিভিন্ন উপায়ে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নেয়া; এলাকাভিত্তিক চাহিদা যাচাই করে টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করা; সকল জেলায় করোনা পরীক্ষার সুযোগ তৈরীর জন্য ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা, করোনা ভাইরাসের পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা যাতে বিঘ্ন না হয় সেটি নিশ্চিত করা, করোনা ভাইরাসের পাশাপাশি নিউমনিয়াসহ অন্যান্য টীকাদান কর্মসূচি নিবিড়িভাবে পরিচালনা করা যাতে করে ঠান্ডাজনিত ভাইরাস থেকে সুরক্ষা সম্ভব হয়; স্বাস্থ্য খাতের সব ধরনের ক্রয়ে সরকারি ক্রয় আইন ও বিধি অনুসরণ করা; ব্যবহৃত সুরক্ষা সামগ্রীসহ চিকিৎসা বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা; সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি পালন করাতে বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে আচরণ পরিবর্তনমূলক কার্যক্রমের উদ্যোগ নেয়া; মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে বলবতকরণের উদ্যোগ নেয়া ইত্যাদি।
সনাক-ময়মনসিংহ এর পক্ষ হতে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সনাক সভাপতি মীর গোলাম মোস্তফা। এর আগে মুক্ত সংলাপের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাক-ময়মনসিংহ এর স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক শরীফুজ্জামান পরাগ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সনাক, ময়মনসিংহের সহ-সভাপতি সুবর্ণা পলি দ্রং । অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারি পরিচালক ডা: মো: রেজাউল আহসান মুছলিমী, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: এইচ কে দেবনাথ, নালিতাবাড়ীর সনাক সভাপতি এন এম সদরুল আহসান, সনাক সদস্য প্রফেসর যামিনী কান্ত সরকার, মুকুল দারু, প্রফেসর বিমল কৃষ্ণ দাস, মার্জিয়া বেগম, এবং সনাক, স্বজন , ইয়েস ও টিআইবি’র বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য ও কর্মকর্তাবৃন্দ।