জাতীয়

৫ আগস্টে জনতার আগুনে পুড়ল বাসভবন;বর্তমানে মাদকের আখড়া

নান্দাইল প্রতিনিধি:৫ আগস্টে জনতার আগুনে পুড়েছে যে বাসভবন সেই ভবনটি বর্তমানে মাদকের আখড়া হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ময়মনসিংহের নান্দাইলে ২০১৪ সন থেকে ২০২৩ইং সন পর্যন্ত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনের পৌর বাসভবনটি পৌরনিবাস নামে বিশেষ পরিচিত ছিল। ক্ষমতা থাকাকালীন তাঁর সমর্থিত আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের আগমন ও প্রস্থানে মুখরিত ছিল ভবনটি। বর্তমানে সেই পরিত্যক্ত তিনতলা বাসভবনটি এখন মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

নান্দাইল মডেল থানা থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে ভবনটি থাকলেও সেখানে দিন দুপুর ও রাতে চলছে মাদক সেবনকারীদের আড্ডা। এলাকাটি আবাসিক এলাকা হলেও স্থানীয় বাসিন্দারা মাদক সেবনকারীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না। এছাড়াও ওই পরিত্যক্ত সাবেক এমপি তুহিনের বাসভবনটিকে ঘিরে যেমন মাদকসেবীদের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে, ঠিক তেমনি চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। জানাগেছে, আলহাজ¦ আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন আওয়ামীলীগের সভানেত্রী ক্ষমতাচ্যূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুব ¯স্নেহভাজন এমপি ছিলেন। এই বাসভবনটিতে বসে অবৈধভাবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি গঠন থেকে শুরু করে সব অবৈধ রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হতো। পেশাজীবী সংগঠনগুলোও চলত এ বাড়ির নির্দেশে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও সংগঠনের নেতারা এখানে নিয়মিত হাজিরা দিতেন। এ বাড়ির কথাই ছিল শেষ কথা। সাবেক এমপি তুহিন নিজেকে গায়েবি এমপি হিসাবে পরিচয় দিতেন, ঠিক তেমনি আলোচনা ও সমালোচনার মুখে পড়ে তিনি ভাইরাল হয়েছিলেন।

কিন্তু ৫ই আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাসভবনটিতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিকান্ড ঘটায় বিক্ষুব্ধ জনতা। বর্তমানে ভবনটির মূল কাঠামো ইটের দেওয়াল ও কংক্রিটের ঢালাইকৃত ছাদ, বাউন্ডারী ওয়াল ও ভবনের সামনে তিনটি অগ্নিদগ্ধ গাড়ির কিছু অংশ পড়ে আছে। ভবনের গেইট, দরজা, জানালা, আসবাবপত্র ও গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে গেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর থেকেই ভবনটি মাদকসেবী ও চোরের আড্ডা খানায় পরিণত হয়েছে। ৫ আগস্টের পর থেকে নান্দাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে। তাই মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাবেক এমপি তুহিনের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, পরিত্যক্ত ভবনে মাদক সেবনের বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি এবং মাদকসেবনকারী সে যেই হোক না কেন, কাউকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।