৮ মার্চ গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির ১ম জাতীয় সম্মেলন
আগামিকাল ৮ মার্চ আন্তজার্তিক নারী দিবসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির ১ম জাতীয় সম্মেলন। জাতীয় প্রেসকাব মিলনায়তনে সকাল ৯:০০ টায় এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘটবে। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির আহ্বায়ক নারী নেত্রী জিনাত আরা এবং প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আাশিকুল আলম। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক রহিমা জামাল গণমাধ্যমে প্রকাশের জন্য এক বিবৃতিতে সংগঠনের সকল পযার্য়ের নেতা—কর্মীদের প্রতি সম্মেলন সফল করার আহবান জানান।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৪ সালের ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনকালে ঢাক বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে প্রগতিশীল ধারার নারী সংগঠন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি গঠিত হয় ।যার লক্ষ্য সাম্রাজ্যবাদ—সামন্তবাদ আমলা মুৎসুদ্দি পুঁজি বিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে অগ্রসর করা। নয়া—ঔপনিবেশিক আধা—সামন্তবাদী বাংলাদেশের নারী আন্দোলনে সুবিধাবাদী—সংশোধনবাদী ধারা এবং এনজিও তৎপরতার বিরুদ্ধে ও বিপরীতে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি ভূমিকা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে লেজুড়বৃত্তি ও নারীবাদীতার মুখোশ উন্মোচন করে নারীর সমঅধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে সমাজব্যবস্থার সামগ্রিক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে অগ্রসর করার জন্য ধারাবাহিক প্রচার—সংগঠন—সংগ্রাম প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে আসছে।
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে পুঁজি ও শক্তি অনুপাতে বাজার ও প্রভাব বলয় পুনর্বন্টন তৎপরতা অগ্রসর হয়ে চলেছে। এ প্রেক্ষিতে ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্বে ন্যাটোর সাথে সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়ার আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ; প্যালেস্টাইনে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মদতপুষ্ট ইসরাইলের আগ্রাসন ও গণহত্যা সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার বিপদ; তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ চীন সাগরে চীন—মার্কিন যুদ্ধ উত্তেজনা ইত্যাদি পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারসহ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিপদকে বৃদ্ধি করে চলেছে। এর প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশসহ এতদঞ্চলে। বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক ও রণনীতিগত সামগ্রিক গুরুত্বের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে একক পরাশক্তি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্বে পাশ্চাত্যের সাথে সাম্রাজ্যবাদী চীন—রাশিয়া প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্রতর হয়ে চলেছে। এতদ্বাঞ্চলের প্রধান আঞ্চলিক শক্তি নয়াঔপনিবেশিক—আধাসামন্তবাদী ভারতের গুরুত্বের প্রেক্ষিতে সাম্রাজ্যবাদীরা ভারতকে নিজ নিজ পক্ষে কাজে লাগাতে তৎপর। ভারত সরকার স্বীয় লক্ষ্যে বাংলাদেশে তার অবস্থান জোরদার করতে সর্বাত্মক তৎপর। এর প্রতিফলন ঘটে বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাম্রাজ্যবাদী উভয়পক্ষ এদেশকে স্ব স্ব পক্ষে যুদ্ধে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে চুক্তিবদ্ধ করে অগ্রসর করার ষড়যন্ত্র—চক্রান্তে লিপ্ত। এ প্রেক্ষিতে ক্ষমতায় থাকা এবং ক্ষমতায় যাওয়া নিয়ে দালাল শাসক—শোষক গোষ্ঠীর মধ্যকার দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে প্রভুরা যুদ্ধে জড়ানোর অপকৌশলে লিপ্ত। প্রতিবেশী মিয়ানমারে সা¤্রাজ্যবাদীদের পরিকল্পনায় গৃহযুদ্ধময় পরিস্থিতি বাংলাদেশের সংঘাতজনিত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। এমন এক পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির প্রথম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়া এদেশের নারী সমাজ সহ শ্রমিক—কৃষক মেহনতি মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপযপূর্ণ। এ সম্মেলন থেকে নারীসহ জাতীয় ও জনজীবনের জরুরি সমস্যা ও দাবি—দাওয়া নিয়ে আন্দোলন—সংগ্রাম গড়ে তোলা ও বেগবান করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।