কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষের সাম্যতা এবং সম্মান তৈরির ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ভূমিকা অপরিহার্য
স্টাফ রিপোর্টার ঃ বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেছেন, পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে নারীর প্রতি সম্মানের জায়গা তৈরী করার মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে । কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষের সাম্যতা এবং সম্মান তৈরির ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ভুমিকার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে মেয়েদের প্রতি সহিংসতা হলে একসাথে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ ব্যাবহারে নারীদের সচেতন থাকার কথাও বলেন তিনি। রবিবার (৮ আগস্ট) বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানী রোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে যুব প্রচারাভিযানে সম্পৃক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন (সি. আর. আই) উদ্যোগে সম্প্রতি ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশন এর মাধ্যমে “জনস্থানে নারীর নিরাপত্তা ক্যাম্পেইন” বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপি’র হিউম্যান রাইটস প্রোগ্রাম-এর সহযোগিতায় বরিশালে ২০১৮ সালে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী সংগঠন ইয়ুথনেট ক্যাম্পেইনটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে । এই ক্যাম্পেইনে যুক্ত হয়ে অংশীজনরা জনস্থানে নারীর নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটার কারণ চিহ্নিত করে সেটি সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সম্মত হন।
প্রচারাভিযানের বিষয়ে ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান বলেন, ‘‘নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি রোধে সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। একজন নারীর নিরাপত্তা ও চলার পথকে মসৃন করতে হলে, তাঁকে অবশ্যই উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক আমাদের এই সমাজে নারীকে তাঁর যোগ্য সম্মান ও অর্জিত জ্ঞান প্রয়োগের তেমন কোন সুযোগই দেয়া হয়না। ঘর থেকে বেরোনোর পরই এক অজানা আতঙ্কে দিন কাটাতে হয় প্রায় প্রতিটি নারীকে। নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবেই হারিয়ে যায় হাজারো সম্ভাবনাময় নারী ঠিক কিছু কুৎসিত মানুষের চিন্তাধারার ন্যায় চির অন্ধকারে। তাই পুরুষতান্ত্রিক আচরণের পরিবর্তনের মাধ্যমে জনস্থানকে নারীর জন্য নিরাপদ করে তোলাই এই প্রচারাভিযানের উদ্দেশ্য।
জাতীয় পর্যায়ে ক্যাম্পেইনের উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে ৩টি বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন – সি. আর. আই এর ভাইস চেয়ারপারসন সায়েমা ওয়াজেদ হোসেন; জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম এনডিসি এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী। বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারনে অনলাইনে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন মহাপুলিশ পরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ; প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এস. ডি. জি এফেয়ার্স প্রধান সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ; সংসদ সদস্য আরোমা দত্ত; আইসিটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, এমপি; মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, এমপি। তাঁরা এই ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নে তাঁদের একাত্মতা ঘোষণা করে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন।
অনলাইনে অনুষ্ঠিত এই ক্যাম্পেইনের সাথে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় লক্ষাধিক তরুণ-তরুণী অংশগ্রহণ করেন। ক্যাম্পেইনটি অনলাইন প্লাটফর্মে সারা দেশব্যাপী পরিচালিত হলেও বিশেষ বিবেচনায় বাংলাদেশের ১০টি এলাকায় সি. আর. আই – এর ইয়ুথ প্লাটফর্ম ইয়ং বাংলার ১০টি সংগঠন এর মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে পরিচালিত হবে।