অন্যান্য

ত্রিশালে বিনাধান-২১ এর প্রচারে মাঠ দিবস উদযাপিত

মোঃ সাইফুল ইসলাম, ময়মনসিংহ:
ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলায় কাজিগ্রাম এর নুর হালিমা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) ময়মনসিংহ এর আয়োজনে বিনা’র প্রতিভাবান বৈজ্ঞানিগণের উদ্ভাবিত আউশ ধানের উচ্চ ফলনশীল জাত বিনাধান-২১ এর প্রচার ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শন, উৎপাদিত ধান কাটা, মাড়াই ও আলোচনা সভার মাধ্যমে মাঠ দিবস উদযাপিত হয়।

মঙ্গলবার ২রা আগস্ট (২০২২) বিকালে ত্রিশালের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ইউএনও) কৃষিবিদ তানিয়া রহমান এর সভাপতিত্বে মাঠ দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিনা উদ্ভাবিত আউশ ধানের উচ্চ ফলনশীল জাত বিনাধান-২১ এর চাষাবাদ কলাকৌশল বিশদ ভাবে ব্যাখ্যা করেন বিনা ময়মনসিংহ এর গবেষণা বিষয়ক পরিচালক ড.মোঃ আব্দুল মালেক। তিনি বছরে একই জমিতে বিনা’র উদ্ভাবিত উন্নত জাতের আউশ,আমন, বোরো ও সরিষা এই ৪টি ফসলের চাষাবাদ পদ্ধতি কীটপতঙ্গ দমন,পানিসেচ, সার নির্বাচন ও প্রয়োগের মাত্রা উল্লেখ করে দিক নির্দেশনা মূলক বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি কাজিরগ্রাম’কে বিনা জাতের ফসলে ভরে দিতে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানান এবং মাঠ দিবসের সফলতা কামনা করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিনা ময়মনসিংহ এর ফলিত গবেষণা ও সম্প্রসারণ বিভাগের প্রধান মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড. মনজুরুল আলম মন্ডল, ময়মনসিংহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মতিউজ্জামান, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (পিএসও) ড.শামীমা বেগম প্রমূখ। বিনা উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল আউশ ধানের জাত বিনাধান-২১ এর উচ্চ ফলনশীলতা, স্বল্প উৎপাদন খরচ, আউশ ধান চাষের সময় পতিত থাকা জমিতে কৃষকের বাড়তি ফসল হিসেবে বিঘা প্রতি ১৬-২০ মণ ধানকে বাড়তি পাওনা হিসেবে উল্লেখ করে বক্তব্য রাখেন কৃষক হারুনুর রশিদ, হাবিবুর রহমান আব্দুস সালাম সহ অনেকেই। মাঠ দিবস এর আলোচনা সভায় ৪০ জন কৃষক ছাড়াও অনেক উৎসাহী কৃষক উপস্থিত ছিলেন এবং আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা প্রশ্ন করে বীজ সংগ্রহের কৌশল এবং উন্নত জাতের ফসলের বীজ প্রাপ্তির উৎস সম্পর্কে খুঁটিনাটি বিষয়ে জেনে নেন।

মাঠ দিবসের অনুষ্ঠান মালার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন বিনা ময়মনসিংহ এর ফলিত গবেষণা ও সম্প্রসারণ বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (এসও) কৃষিবিদ মোঃ মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান। অতিথিবৃন্দ সরেজমিনে ক্ষেতের আইলে উপস্থিত থেকে কৃষক হারুনুর রশিদ এর প্রদর্শনী প্লট থেকে ১০ বর্গমিটার জমির বিনাধান-২১ অন্যান্য কৃষকের সম্মুখে কর্তন ও মাড়াইয়ের পর হিসাব করে দেখা যায় বিঘা প্রতি ১৬-২০ মন ধান উৎপন্ন হয়েছে।

বীজতলায় ১৮-২৪ দিন সহ সর্বমোট ১০৫-১১০ দিনে এই আউশ বিনাধান-২১ ঘরে তোলার সম্ভব বলে জানানো হয়। কাঙ্ক্ষিত মাত্রার চেয়ে অধিক হারে উৎপাদিত বিনাধান-২১ এর আনন্দে মাঠ দিবসে উপস্থিত কৃষকগণ আনন্দে মাতোয়ারা। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ওই এলাকার দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি অফিসার লুৎফুন নাহারসহ বিনা ময়মনসিংহ এর সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *