আনন্দমোহন কলেজ হোস্টেল বন্ধ: শাসকগোষ্ঠীর আধিপত্যের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকে সোচ্চার হওয়ার আহবান
আনন্দমোহন কলেজে ছাত্রলীগের জেলা কমিটি নাকি মহানগর কমিটির নেতৃত্বে শাখা কমিটি গঠণ করা হবে- এই দ্বন্দ্বে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ এবং ছাত্র-শিক্ষক আহত হওয়ার কারণে গত ৪ ডিসেম্বর কলেজ হোস্টেল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে কলেজ প্রশাসন। এতে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়াসহ হোস্টেলের ছাত্র-ছাত্রীদের হল ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। দুই গ্রুপের সংঘর্ষের কারণে আতংিকত হয়ে পড়েছে কলেজটির হাজার হাজার শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাতীয় ছাত্রদলের ময়মনসিংহ জেলা কমিটি। জাতীয় ছাত্রদলের জেলা আহবায়ক সুমাইয়া আক্তার শাপলা এবং যুগ্ম আহবায়ক তানজিদ হাসান এক যুক্ত বিবৃতিতে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কলেজটিতে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাড়া অন্যদের সংগঠন করার সুযোগ দেয়া হয় ন্।া ২০০৯ সালের ২০ জানুয়ারী শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষে কলেজটিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় ছাত্রদলের মিছিলে ছাত্রলীগ কর্তৃক হামলা করার পর থেকেই মূলত কলেজটিতে ভিন্ন কোন ছাত্র সংগঠন প্রকাশ্যে আর সাংগঠনিক তৎপরতা চালাতে পারে নি। ফলে ক্ষমতাসীন দলের পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে ছাত্রলীগ কলেজটিতে একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীতে ছাত্রলীগের মধ্যে আধিপত্যকে কেন্দ্র করে বিবাদমান গ্রুপের দ্বন্দ্বে কলেজে ছাত্ররাজনীতির সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি না হয়ে ছাত্ররাজনীতির নামে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বিদ্যমান থাকে। মূলত: শাসকগোষ্ঠীর বিভিন্ন অংশ তাদের কায়েমী স্বার্থ উদ্ধারের জন্য কিশোর-ছাত্র-তরুণদের এক অংশকে ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়ায়। এসব ছাত্র-তরুণরা নিজেদের পেশীশক্তি প্রদর্শন করার এক বিকৃত সংস্কৃতিতে আচ্ছন্ন হয়ে ধীরে ধীরে বেপরোয়া হয়ে উঠে। এভাবেই শাসকগোষ্ঠীর প্রভাবশালী নেতারা এসব কম বয়সী তরণদের হাতে অস্ত্র, নেশা ও ক্ষমতা তুলে দিয়ে তাদের ব্যবহার করার মাধ্যমে নিজেদের রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করার হীন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে কলেজের চাকুরিরত শিক্ষকরাও তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েন। অন্যদিকে জেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশ প্রশাসনও ক্ষমতাসীনদের দাপটের কারণে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না।
এ প্রেক্ষিতে নেতৃদ্বয় বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করেন, শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করার কারণে কলেজ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উল্টো সাধারণ শিক্ষার্র্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত করেছে। এতে সংশ্লিষ্টরা কলেজে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে আরো উৎসাহিত হবে বলে নেতৃদ্বয় বিবৃতিতে বলেন। নেতৃদ্বয় বিবৃতিতে দাবি জানান- অবিলম্বে কলেজে ছাত্ররাজনীতির অবাধ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সুষ্টু ও প্রগতিশীল ধারার ছাত্ররাজনীতি শিক্ষাঙ্গণে প্রতিষ্ঠিত হলে ছাত্ররাজনীতির নামে শাসকগোষ্ঠীর হাতের ক্রীড়ানক আধিপত্যবিস্তারকারীরা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার সুযোগ পাবে না। এ লক্ষ্যে প্রগতিশীল রাজনীতি চর্চায় ছাত্রসমাজকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান নেতৃদ্বয়।
(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)