কমরেড শেখ আব্দুল হাই কবি’ র স্মরণসভা অনুষ্ঠিত
গতকাল ১০ জানুয়ারি’২৪ বুধবার সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ আমলা দালালপুঁজি বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অগ্রণী সৈনিক, শ্রমিক-কৃষক মেহনতি মানুষের মুক্তির সংগ্রামে আত্মদানকারী কমিউনিস্ট বিপ্লবী নেতা কমরেড শেখ আব্দুল হাই কবি’র ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে যশোর জেলার অভয়নগরের ৬নং বাঘুটিয়া ইউনিয়নে প্রয়াতের নিজ বাড়ির কবরে সকাল ১১টায় পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট যশোর জেলা, নড়াইল জেলা ও অভয়নগর থানা কমিটি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ অভয়নগর থানা কমিটি, বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি অভয়নগর থানা কমিটি, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি অভয়নগর থানা, কমরেড শেখ আব্দুল হাই কবি’র মৃত্যুবার্ষিকী পালন কমিটিসহ স্থানীয় অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
দুপুর ১টায় কমরেড শেখ আব্দুল হাই কবি’র মৃত্যুবার্ষিকী পালন কমিটির উদ্যোগে স্মরণ সভাটি বাঘুটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হল রুমে কমিটির সভাপতি জাহিদ শেখ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক জননেতা প্রকাশ দত্ত। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যাপক তাপস বিশ্বাস। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট যশোর জেলা কমিটির সভাপতি আশুতোষ বিশ্বাস, নড়াইল জেলার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, প্রচার সম্পাদক সাইদুর রহমান, অভয়নগর থানা সভাপতি মনিরুল ইসলাম বাবু, বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি নড়াইল জেলা সভাপতি কৃষকনেতা আহম্মদ বিশ্বাস, যশোর জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক সমীরণ বিশ্বাস, অভয়নগর থানা কমিটির সভাপতি আবু বক্কার সরদার, সাধারণ সম্পাদক সেলিম জমাদ্দার, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি অভয়নগর থানা কমিটির আহ্বায়ক দীপ্ত রাণী দে, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ৬ নং বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তৌয়েবুর রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সভাটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ অভয়নগর থানা সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুসাইন।
বক্তারা বলেন,ষ্বৈরতান্ত্রিক বিএনপি সরকারের সময় ২০০৫ সালে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা কমরেড শেখ আব্দুল হাই কবি শহীদ হোন। দেশে আজো ষ্বৈরতান্ত্রিক সরকার বিদ্যমান। এসব ষ্বৈরতান্ত্রিক সরকারের প্রভু বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহ আজ বিশ্বযুদ্ধের প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হচ্ছে। বাজার ও প্রভাব বলয় পুনর্বণ্টন এবং নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব সুতীব্র আকার ধারণ করে পৃথিবীব্যাপী সাম্রাজ্যবাদী মানব বিধ্বংসী অন্যায় যুদ্ধের বিপদ বৃদ্ধি করে চলেছে। অর্থনৈতিক মন্দা ও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধজনিত পরিস্থিতিতে বিশ্বের দেশে দেশে মুদ্রাস্ফীতি-মূল্যস্ফীতির প্রভাবে শ্রমিক-কৃষক মেহনতি জনগণের জীবন-জীবিকা দুর্বিষহ করে তুলেছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির অধীন হওয়ায় দেশের জাতীয় সংকট বিশ্ব সংকটের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ সংকটের একমাত্র কারণ শোষণমূলক বিশ্বব্যবস্হার ধারক সাম্রাজ্যবাদের এদেশীয় দালাল শাসক-শোষক গোষ্ঠীর অবাধ লুটপাট ও স্বৈরতান্ত্রিক শোষণমূলক রাষ্ট্রযন্ত্র।
স্মরণসভায় বক্তরা বলেন, প্রয়াত কমরেড শেখ আব্দুল হাই কবি’র ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আমরা যে সময় পালন করছি, এ সময়ে জনজীবনের সামগ্রিক সংকটকে পাশ কাটিয়ে দেশের শাসক-শোষকগোষ্ঠী প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পাকাপোক্ত ও ভাগবাটোয়ারা দ্বন্দ্ব-সংঘাতে লিপ্ত। কমরেড শেখ আব্দুল হাই কবি’র মতো বিপ্লবীরা বলতেন, শ্রমিক-কৃষক মেহনতি জনগণের ঘাঁড়ে চেপে বসা শোষণ-নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে বাঁচতে হলে একমাত্র পথ শোষক গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষাকারী সমাজ ও রাষ্ট্রের অন্যায়-অবিচার-শোষণ-প্রহসনের বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়ানো। শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্ব শ্রমিক-কৃষক মেহনতি জনগণের তীব্র লড়াই-সংগ্রামের ধারায় গণ-আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের সাথে বলপ্রয়োগে রাষ্ট্র ক্ষমতা দক্ষল করে শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থরক্ষাকারী রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠা তথা জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন করা প্রয়োজন। বক্তারা আরও বলেন, আগামী দিনে সংকট আরও বেশি ঘনীভূত হতে চলেছে। তাই এখনই আমাদের প্রস্তুতি নেওয়ার সময়। আজ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে আগামী দিনে প্রকৃত মুক্তির লড়াই-সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই- এটাই হোক কমরেড শেখ আব্দুল হাই কবি’র ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকীর শপথ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।।