গারো পাহাড় সীমান্তে চার সাংবাদিকদের ওপর চোরাকারবারীদের হামলা : থানায় মামলা
শেরপুর জেলা প্রতিনিধি : শেরপুরের গারো পাহাড় সীমান্তে চোরাকারবারি ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে শেরপুর প্রেসক্লাবের কার্যকরী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ চার সাংবাদিকের ওপর চোরাকারবারীরা হামলা চালিয়ে মারধোর ও গাড়ি ভাংচুর করেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা ২৩ জানুয়ারী রাতে হামলার সাথে সরাসরি জড়িত স্থানীয় বালু দস্যু মাসুদকে প্রধান আসামী করে ১৫ জনের নামে এবং আরো অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনকে আসামি করে শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। হামলার ঘটনাটি ঘটেছে ২২ জানুয়ারি রাতে। হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলো শেরপুর প্রেস ক্লাবের কার্যকরী সভাপতি রফিক মজিদ, সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের মাসুদ হাসান বাদল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দেশ রুপান্তরের শফিউল আলম সম্রাট, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক মনিরুজ্জামান রিপন। হামলার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেছে শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কাকন রেজা, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হানিফসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এদিকে এ ঘটনায় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শেরপুর পুলিশ সুপার মোঃ আমিনুল ইসলাম।
জানা যায়, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর শেরপুর গাড়ো পাহাড়ের সীমান্ত এলাকার চোরাকারবারীরা সক্রিয় হয়ে উঠে। অভিযোগ ওঠে প্রতি রাতেই বালুর ট্রাকে করে ভারতীয় মদ, ফেনসিডিল এবং অন্যান্য মাদক পাচার হয় ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এমন তথ্য পেয়ে ২২ জানুয়ারী ওই চার সাংবাদিক শ্রীবরদী সীমান্ত এলাকায় যায় খবর সংগ্রহ করতে। খবরের কাজ শেষ করে রাতে ফেরার পথে সীমান্ত এলাকা শয়তান বাজার (মেঘাদল) মোড়ে প্রাইভেটকারের গতিরোধ করে বালু দস্যু মাসুদ, আলামিন সহ ১৫ থেকে ২০ জন দেশীয় অস্রধারী চোরাকারবারী। সেখানে তাদের প্রাইভেটকারটির গ্লাস ভেঙ্গে চুরমার করে দেওয়া হয় এবং সীমান্ত এলাকায় সারাদিনের সংগ্রহ করা সংবাদ নষ্ট করতে সাথে থাকা ১টি ক্যামেরা ও ১টি মোবাইল ভেঙ্গে ফেলে। এ সময় অস্র উচিয়ে ব্যাপক আতংক সৃষ্টি করে এবং সাংবাদিকদের আটকে রাখে।
পরে শ্রীবরদী থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ খবর পেয়ে ঘঁটনাস্থলে আসলে চোরাকারবারীরা মোটর সাইকেল এবং দৌড়ে বিভিন্ন দিকে পালিয়ে যায়। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদল বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিলো শ্রীবরদী সীমান্তে রাত নামলেই অবৈধ বালুর গাড়িতে মাদক পাচার হয় এবং আমরা সেখানে গিয়ে এটার সত্যতা পেয়েছি এবং ভিডিও ধারন করেছি। সীমান্ত এলাকার গডফাদার বালু দস্যু মাসুদ ও তার বাহিনী প্রতিরাতেই পাহাড় থেকে ইজারাবহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলন, মদ, ফেনসিডিল পাচার করে থাকে। ট্রাকে মাদক পাচারকালীন সময়ে ভিডিও ধারন করাই কাল হয়েছে আমাদের।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার জাহিদ বলেন, ২২ তারিখ রাতে চোরাকারবারিরা সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায়। পরে আমি খবর পেয়ে পুলিশ এবং সীমান্ত এলাকায় টহলে থাকা ডিবি পাঠিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করি। এ বিষয়ে আমার থানায় ২৩ জানুয়ারী রাতে একটি মামলা হয়েছে।
শেরপুর জেলা পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের অবাদ সংবাদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে চোরাকারবারীররা বাধা সৃষ্টি করেছে। সন্ত্রাসীদেরকে কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। তারা যে দলেরই হক।