অন্যান্য

ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ে আম্রপালির হাসি 

মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি : আবহমান বাংলায় জৈষ্ঠ্য আষাঢ় মাসে দেশি আমের গাছে পাকা আমের সমারোহে সজ্জিত। আত্বীয়র আত্বীয়তা করতে দুধ কাঁঠালের সাথে পাকা আমের রসে রসিকতা বারে। উন্নত জাতের আম চাষের বাগানের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্ত এলাকা নকশি গ্ৰামের আব্দুল মজিদ মন্ডলের ছেলে মোরাদ মন্ডল আম্রপালি জাতের আম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। তার বুকে অনেক দিনের লালায়িত স্বপ্ন সে আম বাগানের চাষ করবে। গত চার বছর আগে তার পৈত্রিক সম্পত্তি দেড় একর জমিতে , দুইশত বিশটি আমের চারা রোপণ করে আম চাষের বাগান শুরু করে।
এ বাগানের মধ্যেই পাশাপাশি দুইশ কপি গাছের চারা, বিশটি চাইনা -৩ জাতিয় চারা ও চারটি সৈয়দি আরবের খেজুর গাছের চারা এবং কয়েকটি ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করেছে।ইতি মধ্যেই গত দুই বছর ধরে আম গাছে আম ধরা শুরু করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে কৃষক মোরাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমের চারা রাজশাহী থেকে আনতে প্রতি চারা ৬০ টাকা এবং অন্যান্য জায়গা থেকে সংগ্ৰহ করা প্রতিটি কপি চারা ১৫০ টাকা, প্রতিটি লিচু চারা ৬০ টাকা, প্রতিটি সৌদি  আরবের খেজুর গাছের চারা ৮৫০০ টাকা করে পরেছে। পরিচর্যা সহ গত ৪ বছরে এতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে।তবে গত বছর আম বিক্রি করে প্রায় ১ লক্ষ্য টাকা পেয়েছি। এবছরও বেশ ভালো আম ধরেছে, বিক্রি করার পর বোঝা যাবে যে কত টাকা পাওয়া যায়।
আমার বাস্তবতা থেকে বুঝা যায় যে পাহাড়ী উঁচু এলাকা হওয়ায় এ জাতীয় আম চাষের জন্য উপযোগী মাটি । তার কারনে ভালো ফসল পাওয়া যায়। আরো একটি উদ্যেশ্য যে, আদিবাসী অদ্যুসিত কর্ম বিহীন এলাকায় ছোট খাট কর্ম সংস্থানের ব্যাবস্থা করা।আর যদি সরকার উদ্যোক্তদের সাহায্য- সহযোগিতা বা ঋনের ব্যাবস্থা করে। তাহলে অন্যান্যরা উৎসাহিত হবে এবং বেশি করে কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা হবে। এ জায়গায় প্রধান সমস্যা হচ্ছে সেচের সল্পতা। আমার এ বাগানে খরার সময় শ্রমিক নিয়োগ করে , কলসি দিয়ে পানি এনে সেচের ব্যবস্থা করা হয়। আম বাগানের চাষ একটি লাভজনক বাগান।
আমি চাই আমার দেখা- দেখি অন্যরাও উৎসাহিত হোক। সরকারি বেসরকারি বা কোন এনজিও থেকে ঋণ অথবা সাহায্য- সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা জানতে চাওয়া হইলে সে বলে, না তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। তবে এ বছর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ,ধরন্ত আম প্যাক করার জন্য ২ শত ব্যাগ দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির জানান, মোরাদের আমের বাগান একটি মিশ্র বাগান। সে মুলত আম্রপালী জাতের আম বাগান করেছে পাশাপাশি কিছু লিচু, ড্রাগন, সৌদি খেজুর ফলের চারা লাগিয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বপ্রকার প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিয়ে থাকি, পাশাপাশি এ বছর ২ শত ব্যাগ দিয়েছি আম প্যাক করার জন্য।
এতে দেখা যায় কোন প্রকার বিষ, ফরমালিন বা হরমোন প্রয়োগ করতে হয় না। তাতে করে সব ধরনের বালাই থেকে মুক্ত থাকে এবং ফল দেখতে সুন্দর ও পুষ্টিগত মান বজাই রাখে। তবে সেখানে একটা সমস্যা দেখা যায় সেচের ব্যাবস্থাটা খুবই কঠিন। মোরাদ তার বাগানে সেচের ব্যাবস্থার জন্য সহযোগিতা চেয়েছিল।
আমরা বলেছি আমাদের হাতে এ ধরনের প্রজেক্ট সাধারনত থাকে না, তবে সর্বাত্বক চেষ্টা করবো বলে আশ্বাস দিয়েছি। শুধু আম বাগান না সব ধরনের ফলের বাগান ও অন্যান্য কৃষির জন্য প্রযুক্তিগত সুবিধা ও পরামর্শ দিয়ে থাকি। আমাদের চেষ্টা উদ্যোক্তা বৃদ্ধি করা, তাতে করে দেখা যাবে সব ধরনের কৃষি পন্যের অভাব দুর হবে পাশাপাশি কর্ম সংস্থানের ব্যাবস্থাও হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *