দু’বার ডিক্রি পাবার পরও সন্ত্রাসীর কবল থেকে জমির দখল না পাবার অভিযোগ
নান্দাইল প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার এক শিক্ষক গত ১৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীর কবল থেকে জমি ফেরত পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। শনিবার দুপুর একটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন। শিক্ষকের নাম মো. রফিক। তিনি উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বরিল্লা গ্রামের আবদুল মন্নাছের পুত্র ও একই ইউনিয়নের রায়পাশা উচ্চবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক রফিক বলেন, ২০০৭ সালে পাঁচ ভাই মিলে পৃথক দলিল মূলে ১.৮০ একর আবাদি জমি ক্রয় করেন। জমি বিক্রি করেছিলেন পাশের জোয়ালভাঙা গ্রামের রিয়াসত আলী। রিয়াসত আলী জমি বিক্রি করে পাশের আচারগাঁও ইউনিয়নের সিংদই গ্রামে গিয়ে বসতি গড়ে তুলেন। জমি ক্রয় করার পর তিনি তিন বছর ভোগ দখল করেন। ২০১০ সালে পুরো জমি রিয়াসত আলীর পুত্র আবদুল কাশেম জোর করে দখল করে নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন। তিনি সরাসরি রাজনীতি না করলেও বিএনপিকে সমর্থন করেন। তৎকালীন সময়ে জমিদখল করার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলেও ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের প্রভাবে কোনো বিচার পাননি। রফিক আরও জানান, রিয়াসত আলী ঈশ্বরগঞ্জ চৌকি আদালতে তাঁর চারটি সাফকবলা দলিল পন্ড করার দাবি জানিয়ে মোকদ্দমা দায়ের করেন। সেই মোকদ্দমা বিচার শেষে আদালত তাঁর (রফিক) পক্ষে ডিক্রি (রায়) দেন। ভুয়া তথ্য দিয়ে মামলা দায়ের করার জন্য মোকদ্দমার বাদী আবুল কাশেমকে ছয়হাজার টাকা জরিমানা করেন বিজ্ঞ আদালত।
এই আদালতে হেরে কাশেম ময়মনসিংহের দ্বিতীয় সাবজজ আদালতে আপিল করেন। সেই আপিল শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১৮ নভেম্বর আদালত তাঁর পক্ষে দেন। দুটি আদালত থেকে পর পর দুটি ডিক্রি পাবার পরও আবদুল কাশেম আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের মদদে তাঁর ১.৮০ একর ফসলি জমি জোরপূর্বক দখল করে রাখেন। সহকারী শিক্ষক রফিক আবেগাপ্লুত হয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, পতিত সরকারের দানব জাতীয় নেতারা আমার মতো অনেক নিরীহ মানুষের প্রভুত ক্ষতি করেছে। গ্রামে গ্রামে গিয়ে দেখুন শত শত পরিবারের কান্না শুনতে পারবেন। এখন অর্ন্তবর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আইন-আদালতের প্রতি মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে। তাঁর উপর ১৪ বছর যাবৎ যে অন্যায় হয়েছে তার প্রতিকার চান তিনি।
জোয়ালভাঙা গ্রামে গিয়ে শিক্ষকের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আবুল কাশেম (৫৭) বলেন, আমার বাবা-মাকে ভুল বুঝিয়ে জমি কিনে নিয়েছে। তাই তিনি বাবার জমি ছেলে হিসেবে ভোগদখল করছেন।