উপ-সম্পাদকীয়

নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে ধোঁয়াশা;রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়ানোর সম্ভাবনা

রবীন্দ্রনাথ পালঃ অন্তর্বত্তী সরকার ও বিএনপি আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রশ্নে পরস্পর বিরোধী কঠোর অবস্থান নেয়ায় রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষনার দাবী জানিয়ে আসছিল বিএনপি। কিন্তু অন্তর্বত্তী সরকরের প্রধান উপদেষ্টা ড,ইউনুস একটি তারিখ যা সুনির্দিষ্ট নয়,ঘোষণার পর তার প্রেসসচিব ২০২৬ এর জুনে নির্বাচন ঘোষণার পর তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছে বিএনপি। এখন প্রশ্ন উঠেছে কার কথা সঠিক। প্রধান উপদেষ্টা না তার প্রেস সচিব।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ছেড়ে চলে যাবার পর এই অন্তর্বত্তী সরকারকে প্রায় সব দল সমর্থন করে ড,ইউনুস সরকারকে। প্রথম থেকেই বিএনপি একটি যৌক্তিক সময় দেবার কথা বলে অন্তর্বত্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে মোটামুটি একটি শান্ত পরিবেশ সৃষ্টির অপেক্ষায় ছিল। বেশ কিছুদিন আগে জাতিসংঘের অধিবেশনে ড,ইউনুস যোগ দেবার সময় সেনাপ্রধান আঠারো মাসের মধ্যে সম্ভাব্য নির্বাচন আয়োজনের কথা বলে প্রথম আলোচনায় আসেন। কিন্তু সমন্ময়করা সেনা প্রধানের সেই ঘোষণায় খুব একটা খুশি হয়েছিলেন বলে মনে হয়না। জামায়াত অবশ্য খুব দ্রুত একটা নির্বাচন হোক তা চাচ্ছেনা। তারা সময় ক্ষেপন করে দল গোছানোকে আগে গুরুত্ব দিচ্ছে। অর্থাৎ জামায়াত অন্তর্বত্তী সরকার যতটুকু সময় চায়,সেটুকু সময় তারা দিতে চায়।

অন্তর্বত্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পর থেকেই নির্বাচনের সময় ক্ষেপনের জন্য
সংস্কারের ধুঁয়া তোলে নানা সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এই অন্তর্বত্তী সরকার যদি সব সংস্কার করে ফেলে ,তাহলে নির্বাচিত সরকার কি করবে এ প্রশ্নও অনেকের মনে।

বিএনপি বলছে,যতটুকু সংস্কার করে,নির্বাচন দেয়া যায়,ততটুকু সময় অর্থাৎ যৌক্তিক সময় তারা দিতে চায়। বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো চায় ২০২৫ এ নির্বাচন। এখন প্রধান উপদেষ্টা ও তার প্রেসসচিবের দ্বিমুখী সিদ্ধান্তে নাখোশ বিএনপি। নির্বাচন যত দেরী হবে, দেশে সমস্যা তত বাড়বে। একটি নির্বাচিত সরকারের পক্ষে দেশের অস্থির পরিস্থিতি সামাল দেয়া যত দ্রুত সম্ভব,একটি অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে তা সম্ভব নয়। কারন রাজনৈতিক দলগুলোর দেশের সব পর্যায়ে লোকজন ও কর্মী আছে। যখন যে সেক্টরে সমস্যা দেখা দিবে,সেই সেক্টরেই তাদের লোকজন দলের সহায়তায় এগিয়ে আসবে। যেটা এই অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়,তা আমরা গত কিছুদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতায় দেখতে পাচ্ছি।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বিজয় দিবসের বক্তৃতায় বাংলাদেশে নির্বাচনের যে সম্ভাব্য সময়সীমা জানিয়েছেন, তাতে সন্তুষ্ট নয় খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বুধবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ওই ঘোষণা নিয়ে অসন্তোষ জানানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির। আবার নির্বাচনী সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার এ দিনই জানিয়েছেন, আগামী ভোটে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে তাঁরা কোনও বাধা তৈরি করবেন না, যা শুনে হইচই শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, যে কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ‘গণহত্যাকারী’ আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ তারা মানবে না। সমন্ময়করা নতুন দল গঠন ও রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠানো না পর্যন্ত নির্বাচন মেনে
নিবেনা বলে ধারনা করা হচ্ছে।

নির্বাচন কবে হবে, কী ভাবে হবে তা নিয়ে সাড়ে চার মাসে কোনও পথরেখা বা সময়সীমা ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে বলা হচ্ছিল না। পরিবর্তে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কাঠামোগত সংস্কারের কথাই বলে চলেছিলেন ইউনূস ও তাঁর উপদেষ্টারা। বিশেষ করে বিএনপি নির্বাচন ঘোষণা করার জন্য বারে বারে তাগাদা দিচ্ছিল। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক প্রতিদিনই বলছিলেন, সংস্কার করার এক্তিয়ার নির্বাচিত সরকারের। ইউনূস যে সব সংস্কারের কথা বলছেন, সেগুলি ৩১ দফা কর্মসূচিতে আগেই তাঁরা ঘোষণা করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কারটুকু করে ভোটের ব্যবস্থা করা। তার পরে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া। তবেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসতে পারে। তারেক রহমান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বার বার বলছেন, নানা অজুহাত তুলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।

এর পরে সোমবার বিজয় দিবসের ভাষণে ইউনূস জানান, সব শর্ত পূরণ করলে ২০২৫-এর শেষ থেকে ২০২৬-এর প্রথমার্ধের মধ্যে ‘নির্বাচন করা যেতে পারে’। পরের দিন ইউনূসের প্রেস সচিব আবার ব্যাখ্যা দেন, ২০২৬-এর জুনের পরে নির্বাচন হতে পারে। বুধবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশের কথা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণে নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্য অস্পষ্ট। তাঁর বক্তব্যে নির্বাচনের একটি সাম্ভাব্য সময়ের কথা বলা হলেও নির্বাচনের রোড ম্যাপ সম্পর্কে কোনও সুনির্দিষ্ট বক্তব্য নেই।’ ইউনূস ও তাঁর প্রেস সচিবের বক্তব্য পরস্পরবিরোধী বলে মন্তব্য করে বিএনপি বলেছে, ‘এই ধরনের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য আরও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়ে যাওয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিলম্বের প্রয়োজন নেই।’

আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশ নিতে দেওয়া নিয়ে সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম আগে তাঁর আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন। তবে রংপুরে তিনি উল্টো সুরে বলেন, সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন করার লক্ষে সরকারকে পরামর্শ দেবে কমিশন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে বাধা রাখা হবে না কমিশনের রিপোর্টে। এর পরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিবৃতি দেয়, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে একাধিক গণহত্যার জন্য দায়ী। নির্বাচন-সহ যে কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করলে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের শহিদদের রক্তের অবমূল্যায়ন হবে।’নির্বাচন কবে হবে, কী ভাবে হবে তা নিয়ে সাড়ে চার মাসে কোনও পথরেখা বা সময়সীমা ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে বলা হচ্ছিল না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিদিনই বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কারটুকু করে ভোটের ব্যবস্থা করা। তার পরে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া। তবেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসতে পারে। তারেক রহমান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বার বার বলছেন, নানা অজুহাত তুলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশের কথা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণে নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্য অস্পষ্ট। তাঁর বক্তব্যে নির্বাচনের একটি সাম্ভাব্য সময়ের কথা বলা হলেও নির্বাচনের রোড ম্যাপ সম্পর্কে কোনও সুনির্দিষ্ট বক্তব্য নেই।’ ইউনূস ও তাঁর প্রেস সচিবের বক্তব্য পরস্পরবিরোধী বলে মন্তব্য করে বিএনপি বলেছে, ‘এই ধরনের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য আরও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়ে যাওয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিলম্বের প্রয়োজন নেই।’

দ্রুত নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপের দাবিতে আন্দোলনে নামতে যাচ্ছে বিএনপি। আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যেই এ বিষয়ে সুষ্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না হলে ফেব্রুয়ারির প্রথম থেকেই কর্মসূচি শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছেন নেতারা। এর সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ অন্যান্য দাবিও থাকবে। বুধবার জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।

জানা গেছে, বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব উপস্থিত জোট নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশকে নিয়ে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত থেমে নেই। চক্রান্তকারীরা যেকোনো উপায়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এমন সময়ে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে সবাইকে আরও কৌশলী হতে হবে, আরও সংযমী হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য বিবৃতিতে কোনো বিভক্তি আনা যাবে না। এই সরকারকে নির্বাচন আয়োজনের সময় দিতে হবে। তবে সেটা যৌক্তিক হতে হবে। এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিভেদ নয়, আলোচনার টেবিলকেই বেশি প্রাধান্য দিতে হবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অবস্থা, জনগণের নানা সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে মতবিনিময় করেছি। পঁচিশেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও সমমনারা দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা মিত্র দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি।

গত শনিবার বিকালে ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বাংলাদেশ
লেবার পার্টির সঙ্গে পৃথকভাবে রাজধানীর গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। এতে দেশের বর্তমান পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে মত দেন মিত্র দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সার্বিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার তারা তা করবে বলেও মত দেন নেতারা।
বৈঠক সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা প্রসঙ্গে জোট নেতাদের কাছে মতামত জানতে যায় বিএনপি। সেখানে এসব জোট ও দলের নেতারা অভিন্ন সুরে জানান, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনোভাবেই ২০২৫ সাল অতিক্রম করতে পারে না। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশে অস্থিরতা বাড়বে, পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা আরও শক্তি সঞ্চয় করে গভীর ষড়যন্ত্র করতে সক্ষম হবে। এতে দেশ ও জাতির বড় ক্ষতি হবে।

আরও জানা যায়, বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও তার প্রেস সচিবের বক্তব্যে পরস্পরবিরোধী উল্লেখ করে এর সমালোচনা করেন নেতারা। তারা বলেন, সরকারের মধ্যেই কোনো সমন্বয় নেই। এতে শুধু রাজনৈতিক অঙ্গণে নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। তাই সরকারের মধ্যে অবশ্যই সমন্বয় থাকা উচিত এবং নির্বাচন ইস্যুকে তাদের সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া উচিত।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু।

জানা গেছে, বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশকে নিয়ে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত থেমে নেই। চক্রান্তকারীরা যেকোনো উপায়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এমন সময়ে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে সবাইকে আরও কৌশলী হতে হবে, আরও সংযমী হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য বিবৃতিতে কোনো বিভক্তি আনা যাবে ন। এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিভেদ নয়, আলোচনার টেবিলকেই বেশি প্রাধান্য দিতে হবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

১২ দলীয় জোট প্রধান জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, বর্তমানে দেশের উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমাদের আগামী দিনে কর্মসূচি কি হওয়া উচিত, সেসব বিষয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলেছি। কিন্তু আমরা কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হইনি। বিএনপি, ১২ দলীয় জোটসহ যারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। আমাদের সেই ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি। আগামীতে সেটা আরও গভীরভাবে অনুভূত হবে। সবাইকে নিয়ে খুব শিগগিরই আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করবো।

১২ দলীয় জোটের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিকল্পধারার নুরুল আমিন বেপারী, বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ, লেবার পার্টির লায়ন মো. ফারুক রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের অধ্যাপক আবদুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম ও জাগপা রাশেদ প্রধান।
এনপিপির ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটে থাকা ১১ টি দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ লেবার পার্টি নেতারা বিএনপির লিয়োজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। জানা গেছে, দুয়েকদিনের মধ্যে অন্যান্য সমমনা দলগুলোর সঙ্গেও ধারাবাহিক বৈঠক করবে বিএনপি।
গত শনিবারের ১২ দলীয় জোটের বৈঠক সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা প্রসঙ্গে জোট নেতাদের কাছে মতামত জানতে যায় বিএনপি। সেখানে এসব জোট ও দলের নেতারা অভিন্ন সুরে জানান, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনোভাবেই ২০২৫ সাল অতিক্রম করতে পারে না। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশে অস্থিরতা বাড়বে, পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা আরও শক্তি সঞ্চয় করে গভীর ষড়যন্ত্র করতে সক্ষম হবে। এতে দেশ ও জাতির বড় ক্ষতি হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু।এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের রাজনৈতিক অঁঙ্গন আগামী জানুয়ারীতেই উত্তপ্ত হতে চলেছে। আর এ সুযোগে মাঠে
ফেরার অপেক্ষায় আছে আওয়ামী লীগ। হয়তো দেখা যাবে নির্বাচনী আন্দোলনে
বিএনপির সাথে একসাথে মাঠে নামছে আওয়ামী ঘরানার জোট। কারন প্রতিবেশী দেশ ও যে কোন মুল্যে অাওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পূর্নবাসন করতে মরিয়া। রাজনীতির এই খেলায় যদি ভোলপাল্টে পতিত সৈরাচার মাঠে নামার বিকল্প পথ বেছে নিতে পারে। আর তা হলে আশ্চর্য হবার কিছু নেই।

সিনিয়র সাংবাদিক
দৈনিক আজকের বাংলাদেশ