অন্যান্যজাতীয়

প্রয়াত কৃষকনেতা মাস্টার ইমান আলীর ১৩-তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার: করনো মহামারীতে কর্মহীন ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ, সার-বীজ-ডিজেল-কীটনাশক বিনামূল্যে ও অন্যান্য কৃষি উৎপাদনের উপকরণ ভর্তুকি মূল্য প্রদান এবং উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য, শ্রমিক-শ্রমজীবী-ভূমিহীন কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের মাঝে রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি করেন বাংলাদেশ  কৃষক সংগ্রাম সমিতি। আজ ২৬ মে ২০২১ বুধবার কৃষক সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি প্রয়াত কৃষকনেতা মাস্টার ইমান আলী’র ১৩-তম মৃত্যুবার্ষিকীতে এসব দাবি করেন কৃষক নেতৃবৃন্দ। মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মল্লিকপুরস্থ সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও ১মিনিট  শোক নিরবতা পালন করা হয়। এ সময়  উপস্থিত নেতা-কর্মিরা শপথ পাঠ গ্রহণ করেন।  শপথ পাঠ করান কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হক লিকু। এরপর সংগঠনের  কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত  স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্মরণসভায়  নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা মহামারীতে এমনিতেই কৃষকসহ দেশবাসী বিপর্যস্ত। এমতাবস্থায় বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, আম্ফানের ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই উপকূলে আঘাত হেনেছে সুপার সাইক্লোন ইয়শ। নেতৃবন্দ উপকূলীয় অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক-জনতাকে ক্ষতিপূরণের আওতায় আনার জোর দাবি জানান। এ সময় দেশে করোনা সংক্রমণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের এ পর্যায়ে পুনরায় দেশ ক্রমান্বয়ে বেশি সংক্রমণের দিকে যাচ্ছে। আমেরিকা-ইউরোপে সর্বোচ্চ সংক্রমণের পর পর্যাপ্ত টিকাদান কর্মসূচির প্রেক্ষিতে সংক্রমণ কমার সময় পর্যায়ক্রমে পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে। মূলত সরকার প্রথম থেকে কোন পরিকল্পনা ছাড়া যখন যা খুশি তাই করছে, এখনও সে পথই অনুসরণ করে চলেছে। অন্যদিকে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা এমনিতেই দেশে কখনও ভাল ছিল না। ধনীরা নির্ভর করতো সিঙ্গাপুরসহ ইউরোপ-আমেরিকার ওপর আর মধ্যবিত্তরা নির্ভর করতো পাশ্ববর্তি ভারতের ওপর। নিম্নমধ্যবিত্তসহ সাধারণ মানুষ নির্ভর করতো দেশের সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালগুলিতে। আর হতদরিদ্ররা গ্রাম্য চিকিৎসকসহ কবিরাজ-ঝাড়ফুকের ওপর। করোনা মহামারীকালে যেমন করোনার চিকিৎসা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তেমনি স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক দুর্নীতিসহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসা মূলত হচ্ছেই না। এমতাবস্থায় জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ব্যর্থতা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় দায় জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে দেশকে ব্যাপক সংক্রমণ ও মৃত্যু ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে এবং ডাক্তারসহ স্বাস্থ্য বিভাগকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশকারী সাংবািিদক রোজিনা ইসলামকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার ও হয়রানি করেছে। আবার দেশের পাসপোর্টে ইসরাইলের নাম বাদ দিলে নতুন করে আরেকটি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এমতাবস্থায় নেতৃবৃন্দ সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবেলা করে সার-বীজ-ডিজেল-কীটনাশক বিনামূল্যে ও অন্যান্য কৃষি উৎপাদনের উপকরণ ভর্তুতি মূল্যে প্রদান এবং উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য, শ্রমিক-শ্রমজীবী-ভূমিহীন কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের মাঝে রেশনিং ব্যবস্থা চালুসহ কৃষক-জনগণকে রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে জোর আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *