ভ্রাম্যমাণ কোর্টের অর্থদন্ডের শিকার পানের দোকানদারসহ জরুরি যান মেরামতকারী
স্টাফ রিপোর্টার: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারী প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে ময়মনসিংহ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে ভ্রাম্যমান কোর্ট। ভোর ৬ টা থেকে শুরু করে রাত ৮ টা পর্যন্ত প্রতিদিন এ অভিযান পরিচালনা করার কথা জানায় জেলা প্রশাসন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হকের সার্বক্ষণিক তদারকিতে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ২৮ জুন সোমবার শহরের বিভিন্ন এলাকায় পরিচালিত অভিযানে ২০ টি মামলায় মোট ৪৩ হাজার ২০০ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করার কথা জানানো হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও এটিএম আরিফ। অভিযানের অংশ হিসেবে দুপুর প্রায় ১২ ঘটিকায় মাসকান্দা-দিঘারকান্দা এলাকায় বিভিন্ন মেকানিকস ওয়ার্কসপ ও পান-মুদির দোকানগুলিতেও জরিমানা আরোপ করা হয়। এ সময় দিঘারকান্দা কাদুরবাড়ি এলাকায় অবস্থিত মক্কা ইঞ্জিনিয়ারিংকে ১০০০ টাকা এবং এর পার্শ্ববর্তী একটি পানের দোকানকে ৩০০ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মক্কা ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্বত্তাধিকারী মেকানিক আবু সায়ীদ জানান, আমরা জানি ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন করা হবে। এ কারণে শহরের বিভিন্ন এলাকায় দোকান পাট খোলা দেখে এসেছি । তাই আমিও খোলা রাখলাম। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট সাব এসে আমাদের কোন কথা না শোনে জরিমানা ধরে বসেন। পানের দোকানদার আকাশ জানান, দোকানটাই আমার চলার একমাত্র সম্বল। সারা মাসের সংসারের খরচ ও সপ্তাহে সপ্তাহে কিস্তিও পরিশোধ করি এই দোকান দিয়ে। ম্যাজিস্ট্রেট স্যার আমাকে ৩০০ টাকা জরিমানা ধরেছেন, কিন্তু দিনে আমার ৩০০ টাকা ইনকামও হয় না।
জরিমানা আরোপের সময় সেখানে উপস্থিত থাকেন পার্স্শবর্তী এক ওয়ার্কসপের স্বত্ত্বাধিকারী এবং ময়মনসিংহ জেলা মটরস ওয়ার্কসপ মেকানিকস ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান বাবুল। তিনি তখন সরকারী প্রজ্ঞাপণের বিষয়ে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট হাসান আব্দুল¬াহ আল মাহমুদ কাছে নির্দেশনা সম্পর্কে জানতে চান। কিন্তু দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট তার কথার জবাব না দিয়ে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে চান। এ সময় উপস্থিত লোকজনের মধ্যে প্রতিক্রিয়া শুরু হলে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট জরিমানার টাকা আদায় করে তাঁর টিম নিয়ে দ্রুত চলে যান। এ সম্পর্কে প্রবীণ শ্রমিকনেতা মাহবুবুর রহমান বাবুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি প্রজ্ঞাপন সম্পর্কে আমরা জেনেছি ১ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হবে। পরস্পর শুনলাম গতকালকেও নাকি আরেকটি প্রজ্ঞপন জারি হয়েছে। কিন্তু সেটা মার্কেট, শপিং মল ও গণপরিবহনের জন্য। তাছাড়া ওয়ার্কসপগুলি জরুরি সেবা প্রদান করে থাকে। এম্বুলেন্স ও পণ্যবাহী যানের জরুরি সেবাগলি আমরা দিয়ে থাকি। আমাদের ওয়ার্কসপ বন্ধ থাকলে এম্বলেন্স ও পণ্যবাহী গাড়িও বন্ধ হয়ে যাবে। আমি এই বিষয়টাই ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবকে বোঝাতে চেয়েছিলাম এবং প্রজ্ঞপণের নির্দেশনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্ত তিনি আমার কোন কথা না শোনে আমাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে চান।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি শ্রমিকনেতা মাহবুবর রহমান বাবুলের সাথে মোবাইলে কথা বলে বিভিন্ন খোঁজ খবর নেন।