১০ দফা দাবিতে শ্রম উপদেষ্টাকে গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের স্মারকলিপি প্রদান
ঢাকা প্রতিনিধি: পোশাক শিল্প সেক্টরে সকল বন্ধ কারখানা চালু,বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও রেশনিং ব্যবস্থা চালু এবং শ্রমিকদের উপর দমন-পীড়ন নির্যাতন ও সকল প্রকার হয়রানি বন্ধসহ ১০-দফা দাবিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলন। এ উপলক্ষে ২৩ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন। সমাবেশটি পরিচালনা করেন আন্দোলনের সদস্য সচিব ও গার্মেন্টস-টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ। এছাড়া সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের কার্যকরী সভাপতি শামীম ইমাম, বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াসিন, সোয়েটার গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এএএম ফয়েজ, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম সবুজ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ এবং গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ১০ দফা দাবির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। দাবিসমূহ হলো-
(১) দেশে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে বাজারদরের সাথে সঙ্গতিরেখে মজুরি বৃদ্ধি ও অনতিবিলম্বে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
(২) যেসব কারখানার মালিক নিয়মিত মজুরি পরিশোধ করছে না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণসহ সংশ্লিষ্ট কারখানা মালিকের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে শ্রমিকদের নিয়মিত মজুরি নিশ্চিত করতে হবে।
(৩) গার্মেন্টস কারখানা ও শিল্পাঞ্চলে মালিক ও সন্ত্রাসীদের দমন-পীড়ন-নির্যাতন বন্ধ করাসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
(8) পোশাক শিল্প সেক্টরের জন্য চুক্তিকৃত ৯% ইনক্রিমেন্ট গার্মেন্টস ও কটন-টেক্সটাইলের সকল শ্রমিকদের প্রদান করতে হবে।
(৫) মজুরিবৃদ্ধির আন্দোলনসহ ইতিপূর্বে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল প্রকার হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
(৬) মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন দমন করতে শ্রমিক হত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতসহ নিহত শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
(৭) শ্রম আইনের সকল কালো ধারা বাতিল করে ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রদানসহ সকল শিল্প ও প্রতিষ্ঠানের জন্য একই রকম গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন করতে হবে।
(৮) বেক্সিমকোসহ সকল বন্ধ কারখানা চালু এবং শ্রমিকদের সকল বকেয়া পাওনা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।
(৯) শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে দন্ডবিধির ১৮৮-ধারায় কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
(১০) শিল্পাঞ্চল থেকে শিল্প পুলিশ প্রত্যাহারসহ কারখানা ও শিল্পাঞ্চলে পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।
স্মারকলিপিটি অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়কসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে যেয়ে প্রদান করেন। অনুলিপি সচিব শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, মহাপরিচালক শ্রম অধিদপ্তর, মহাপরিদর্শক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রদান করা হয়।